মোরেনা: সকলে জানে, রাজনীতি হল টাকা তৈরির কারখানা। রাজনীতিকরা  সকলেই বিশাল অর্থবান, তাঁদের হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া। কিন্তু ব্যতিক্রম মধ্যপ্রদেশের এই নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক। প্রাসাদ তো দূরের কথা, তাঁর থাকার জন্য ঠিকমত বাড়িও নেই একটা। স্ত্রীর সঙ্গে কুঁড়েঘরে থাকেন তিনি।


ভারতীয় জনতা পার্টির ৫৫ বছর বয়সী এই বিধায়কের নাম সীতারাম আদিবাসী। শেওপুর জেলার একটি কুঁড়েতে তাঁর সপরিবারে বসবাস। এর আগে তিনবার বিধানসভা ভোটে দাঁড়ান এই রাজনীতিক। একবার নির্দল হিসেবে, দুবার বিজেপির হয়ে। কিন্তু জিততে পারেননি। এবার শিকে ছিঁড়েছে। শেওপুরের বিজয়পুর কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী রামনিবাস রাওয়াতকে হারিয়ে এই প্রথম বিধানসভায় গিয়েছেন সীতারাম। নভেম্বরে বিধানসভা ভোটের আগে সম্পত্তি সংক্রান্ত যে এফিডেভিট পেশ করেছিলেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, তাঁর আছে ৪৬,৭৩৩ টাকা, এর মধ্যে ২৫,০০০ টাকা নগদ রয়েছে। বাকিটা আছে দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আর রয়েছে ৬০০ বর্গ ফুট জমি, তাতে দাঁড়িয়ে তাঁর কুঁড়ে। ২ একরের অন্য একটি জমি রয়েছে। দুটি জমির বর্তমান বাজারমূল্য ৫ লাখ টাকা।

এ হেন সীতারাম কিন্তু স্থানীয় মানুষের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়। মানুষের বিপদে আপদে সব সময় পাশে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু তাঁদের বিধায়ক যে এভাবে কুঁড়েঘরে থাকেন, তা শেওপুরের মানুষের মোটেই পছন্দ নয়। তাঁরা ঠিক করেছেন, নিজেরাই চাঁদা তুলে বানিয়ে দেবেন বিধায়কের বাড়ি। চাঁদা উঠছে, কেউ দিচ্ছেন ১০০ টাকা, কেউ বা ১,০০০। তাঁদের ইচ্ছে, এলাকাতেই একটি দুই ঘরের বাড়ি সীতারামকে বানিয়ে দেবেন তাঁরা। আবার সীতারাম যখন ভোটে জেতেন, তখন এলাকার মানুষ মুদ্রা দিয়ে ওজন মাপেন তাঁর। সেই টাকাও এই বাড়ি তৈরিতে খরচ হবে।

বিধায়কের স্ত্রী ইমারতি বাঈ বলেছেন, স্থানীয় মানুষ তাঁর স্বামীকে ভালবাসেন, কারণ তিনি তাঁদের জন্য পরিশ্রম করেন। আর আপ্লুত সীতারাম জানাচ্ছেন, বিধায়ক হিসেবে সরকারের কাছ থেকে প্রথম বেতন পেয়ে সেই টাকা গরিবের উন্নতিতে খরচ করবেন তিনি।