নয়াদিল্লি: চিনের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা মোটেই কাজের কথা নয় বলে মনে করেন দেশের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এম কে নারায়ণন। একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারত এবং চিন পরস্পরের শত্রু নয়।


লাদাখের গালওয়ানে গত ১৫ জুন চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন। তার পর থেকে ভারত-চিন চাপানউতোর চলছে। সামরিক স্তরে যেমন লাদাখে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চালাচ্ছে, তেমনই অর্থনৈতিক ভাবে চিনকে চাপে রাখার কৌশলও নিয়েছে ভারত। জনপ্রিয় টিকটক-সহ ১০৬টি চিনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। শুধু তাই নয়, দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে চিনের প্রবেশ বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে। চিনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আগের করা চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। সরাসরি চিনের নাম না-করলেও, দু’টি চিনা টেলিকম সংস্থাকে ৫-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের ক্ষেত্র থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে বলেও খবর। এ পরিস্থিতিতে নারায়ণন মনে করেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে চিনের সঙ্গে সম্পর্কে দাঁড়ি টানার ভাবনা মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘চিনের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে সম্পর্কের সব রাস্তা আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। আমি বিষয়টিকে এ ভাবে দেখি। কারণ আমাদের অগ্রগতি, উন্নতি প্রয়োজন।’

২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নারায়ণনের মতে, ভারত-চিন পরস্পরের শত্রু নয়। কিন্তু এটাও ঠিক, বন্ধুত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে বারবার সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুই সভ্যতার মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছেদ না করে তা বজায় রাখার উপরে জোর দিয়েছেন নারায়ণন।

পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘গতবার রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপে অংশ নিতে চায়নি নয়াদিল্লি। বিশ্বে মোট জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ এশিয়ার জোটভুক্ত দেশগুলির আওতায়। নারায়ণন বলেন, আরসিইপি-র অংশ না হয়ে আমরাই কার্যত চিনকে জমি ছেড়ে দিয়েছি। ভারতের পিছু হঠা উচিত নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের উপস্থিতি প্রয়োজন। আমার মনে হয় সেই লক্ষ্য পূরণে সাম্প্রতিককালে ভারতের তেমন পদক্ষেপ করা উচিত ছিল।’