নয়াদিল্লি: বুধবার তামিলনাড়ুর কুন্নুরে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের। তাঁর সঙ্গেই হেলিকপ্টারে ছিলেন স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত। দুর্ঘটনায় তাঁরও মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সারা দেশেই শোকের ছায়া। তবে মধ্যপ্রদেশের শাহদল জেলার সোহাগপুরে শোক একটু বেশিই। কারণ, এখানকার রাজপরিবারের মেয়ে ছিলেন মধুলিকা। তাঁর বাবার নাম কুঁয়ার মৃগেন্দ্র সিংহ। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই মধুলিকার ভাই যশবর্ধন সিংহ ভোপাল থেকে দিল্লি গিয়েছেন।
গত বছরের ১ জানুয়ারি চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ নির্বাচিত হন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তাঁর স্ত্রী সেনাবাহিনীতে কর্মরত আধিকারিকদের স্ত্রীদের কল্যাণে গঠিত সংগঠনের সভানেত্রী ছিলেন। এই সংগঠন সেনা আধিকারিকদের স্ত্রী, সন্তান এবং সেনা আধিকারিকদের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের কল্যাণের জন্য কাজ করে।
মধুলিকা মধ্যপ্রদেশের মেয়ে হলেও, তিনি দিল্লিতে পড়াশোনা করেন। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক হন। তিনি বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য তিনি কাজ করতেন।
জেনারেল বিপিন রাওয়াতের বাবা লক্ষ্মণ সিংহ রাওয়াতও ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি লেফটেন্যান্ট-জেনারেল পদে উন্নীত হন। জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মা কিষাণ সিংহ পারমার উত্তরকাশীর বিধায়ক ছিলেন। প্রয়াত চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের দুই কন্যা বর্তমান।
১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সেনাপ্রধান হয়েছিলেন আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ হন তিনি। দু’বছরের মাথায়, সেই ডিসেম্বরেই, ভয়াবহ কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চার দশকের কেরিয়ারে অনেক কঠিন পরিস্থিতিতেই পড়েছেন তিনি। সেসব সামলে একের পর এক ধাপ পেরিয়ে, উঠে আসেন ভারতীয় সেনার সর্বোচ্চ পদে।
এর আগে ২০১৫-য় কোর কম্যান্ডার পদে থাকাকালীন নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে বিপিন রাওয়াতের চপার ভেঙে পড়ে। সেবার অক্ষত ছিলেন বিপিন রাওয়াত। কিন্তু বুধবার আর শেষরক্ষা হল না।