কিন্তু একদা রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জ্যোতিরাদিত্য কেন কংগ্রেস ছাড়লেন? তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের টালবাহানার জেরেই ক্ষুব্ধ হন এই নেতা। তিনি রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রথম প্রার্থী হতে চাইছিলেন। কারণ, প্রথম আসনে জয় নিশ্চিত ছিল। দ্বিতীয় প্রার্থী হিসেবে জয় কঠিন বলেই মনে করেছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। সেই কারণেই তিনি প্রথম আসনটি চাইছিলেন। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ও প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংহের চাপে কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে ধীরে চলো নীতি নেয়। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথের কথা ভাবতে শুরু করেন জ্যোতিরাদিত্য। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বিজেপি। মধ্যপ্রদেশে সরকার ফেলার জন্য সক্রিয় হয় বিজেপি নেতৃত্ব। এর ফলশ্রুতিতেই কংগ্রেস ছাড়লেন একঝাঁক বিধায়ক।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে জ্যোতিরাদিত্য লিখেছেন, ‘কংগ্রেসে থেকে মানুষের জন্য কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি কর্মী ও মানুষের কথা ভেবেই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। কিন্তু তাঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয় কমলনাথকে। এমনকী, মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও করা হয়নি জ্যোতিরাদিত্যকে। তাঁকে লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দিয়ে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু সেখানে কংগ্রেস একটিও আসন পায়নি। তিনি নিজেও হেরে যান। এরপর পদত্যাগ করে দলকে বার্তা দিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া শুরু করেন তিনি। সম্প্রতি তিনি কমলনাথ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলেন, ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা না হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন। এই মন্তব্যের জবাব দেননি কমলনাথ। এরপর ক্রমশঃ দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন জ্যোতিরাদিত্য। তিনি ট্যুইটারে বায়োতে দলের নাম মুছে দেন। সেটা নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় তিনি দাবি করেন, দল ছাড়ছেন না। কিন্তু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন।
এ বিষয়ে এক কংগ্রেস নেতা বলেছেন, ‘জ্যোতিরাদিত্য কংগ্রেস ছাড়বেন, এটা আমরা আশা করিনি।’ তবে আজ মধ্যপ্রদেশের এই প্রথমসারির নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে কংগ্রেস। যদিও বিজেপি শিবিরের দাবি, তিনি পদত্যাগ করেছেন।