কলকাতা: আজ মহা শিবরাত্রি (Maha Shivratri)। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, মহাদেবের (Mahadev) ভক্তরা এই দিনটি পালন করছেন। তীর্থক্ষেত্রগুলিতে পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। এই পুণ্যতিথিতে জেনে নেওয়া যাক শিবমাহাত্ম্যের অন্যতম পীঠস্থান উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) গুপ্তকাশীর (Guptkashi) বিশ্বনাথ মন্দির (Vishwanath Temple)।
উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৪,৩২৭ ফুট উঁচুতে অবস্থিত বিশ্বনাথ মন্দির। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের (Kashi Vishwanath Temple) আদলেই তৈরি হয়েছে এই মন্দিরটি। মাহাত্ম্যের বিচারেও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের মতোই গুপ্তকাশীর বিশ্বনাথ মন্দির।
পুরাণ অনুযায়ী, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর ব্রহ্মহত্যার পাপ লাঘব করার জন্য শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শে শিবঠাকুরের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে যান পাণ্ডবরা। কিন্তু শিবঠাকুর পাণ্ডবদের ক্ষমা করতে রাজি ছিলেন না। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আত্মীয়-স্বজনদের হত্যার পাপের ফল ভোগ করতেই হবে। কিন্তু নাছোড়বান্দা পাণ্ডবরা শিবঠাকুরের কাছে বারবার ক্ষমাপ্রার্থনা করতে থাকেন। তাঁদের এড়ানোর জন্য নানা বেশে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতে থাকেন মহাদেব। কাশীতে পাণ্ডবদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে তিনি ষাঁড় নন্দীর বেশে গুপ্তকাশীতে এসে আত্মগোপন করেন। কিন্তু পাণ্ডবরা তাঁকে চিনে ফেলেন। নন্দীর বেশে থাকা শিবের লেজ ও পিছনের পা ধরতে যান ভীম। কিন্তু তাঁর নাগাল এড়িয়ে গুহায় আত্মগোপন করেন দেবাদিদেব। তাঁর এই আত্মগোপনের কারণেই জায়গাটির নাম হয়েছে গুপ্তকাশী।
আরও পড়ুন শিবরাত্রি করবেন বলে ঠিক করেছেন ? চারপ্রহরের পুজো-সংক্ষেপ
আরও একটি জনশ্রুতি হল, এই গুপ্তকাশীতেই পার্বতীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন শিব। এরপর তাঁরা মন্দাকিনী ও শোনগঙ্গা নদীর মোহনার তীরে ত্রিযুগীনারায়ণ নামে একটি গ্রামে বিয়ে করেন।
গুপ্তকাশী থেকে কেদারনাথের দূরত্ব ৪৬ কিলোমিটার। উখীমঠের দূরত্বও বেশি নয়। দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের যে তীর্থক্ষেত্রগুলিতে সবচেয়ে বেশি পুণ্যার্থীদের ভিড় হয়, সেগুলির অন্যতম গুপ্তকাশীর বিশ্বনাথ মন্দির।
এই মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণও করেন। মন্দিরে দু’টি জলধারা আছে। একটিতে গঙ্গার জল এবং অপরটিতে যমুনার জল। পুণ্যার্থীরা এই জল মাথায় ছিটিয়ে মূল মন্দিরে প্রবেশ করেন। পাশাপাশি দু’টি মন্দির, একটি বিশ্বনাথের এবং অপরটি শিবের অর্ধনারীশ্বর রূপের। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে শিবঠাকুরের উদ্দেশে ধনসম্পদ অর্পণ করলে, সেগুলি অনেক গুণ বেশি ফিরে আসে। তাই অনেকে নারকেলের মধ্যে টাকা, গয়না অর্পণ করেন।