দেশভাগের সময় আরএসএসের শাখায় গিয়েছিলেন, স্বয়মসেবকদের শৃঙ্খলায় মুগ্ধ হয়েছিলেন গাঁধী, বললেন ভাগবত
Web Desk, ABP Ananda | 02 Oct 2019 08:41 PM (IST)
গাঁধীর স্বদেশী ভাবনাচিন্তার উল্লেখ করেও ভাগবত বলেন, তিনি এমন এক চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া পেশ করেছিলেন, যার মূলে রয়েছে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব পরিচিতির ছাপ তুলে ধরা। কিন্তু ‘দাসত্বের মানসিকতাসম্পন্ন’ লোকজন পশ্চিমী মূল্যবোধকে নিজেদের মডেল করেছেন।
নয়াদিল্লি: দেশ বিভাজনের সময় মহাত্মা গাঁধী আরএসএসের একটি শাখায় গিয়েছিলেন, স্বয়মসেবকদের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হয়েছিল, তাঁরা শৃঙ্খলাপরায়ণ, তাঁদের মধ্যে বিভেদমূলক ভাবনা নেই দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। এমনই দাবি করলেন মোহন ভাগবত। সঙ্ঘের স্বয়মসেবকরা নিজেদের শাখায় সকালের প্রার্থনায় গাঁধী ও তাঁর মূল্যবোধকে স্মরণ করেন বলেও জানান তিনি। সঙ্ঘের ক্যাডারদের দৈনিক জমায়েতে যে ‘একাত্মতা স্তোত্র’ পাঠ করা হয়, বুধবার সেই প্রসঙ্গে একথা বলেন সঙ্ঘ প্রধান। আজ দেশব্যাপী চলছে মহাত্মার ১৫০-তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন। আরএসএসের ওয়েবসাইটে ভাগবতের একটি লেখা বেরিয়েছে আজ। সেখানে তিনি বলেছেন, ১৯৪৭-এ দেশ বিভাজনের ট্র্যাজেডির সময় গাঁধীজি তাঁর দিল্লির বাসভবনের কাছে একটি শাখায় গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে স্বয়মসেবকদের সঙ্গে কথা বলেন। তার রিপোর্ট বেরিয়েছিল ১৯৪৭ এর ২৭ সেপ্টেম্বরের ‘হরিজন’ পত্রিকায়। তাতে বলা হয়, স্বয়মসেবকদের শৃঙ্খলাবোধে, তাঁদের মধ্যে বিভেদের মানসিকতা, জাতপাতের ভেদাভেদ নেই দেখেও খুশি হন তিনি। ১৯৩৬ সালে ওয়ার্ধার কাছে সঙ্ঘের এক শিবিরেও গাঁধী গিয়েছিলেন, পরদিন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ হেডগেওয়ারও গাঁধীর আশ্রমে গিয়ে দেখা করেন। দুজনের আলোচনা, দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর পর্বের গোটা বিবরণী এখন জনসমক্ষেই রয়েছে। গাঁধীর স্বদেশী ভাবনাচিন্তার উল্লেখ করেও ভাগবত বলেন, তিনি এমন এক চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া পেশ করেছিলেন, যার মূলে রয়েছে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব পরিচিতির ছাপ তুলে ধরা। কিন্তু ‘দাসত্বের মানসিকতাসম্পন্ন’ লোকজন পশ্চিমী মূল্যবোধকে নিজেদের মডেল করেছেন। ভাগবত আরও বলেন, পশ্চিমী দুনিয়া তার অর্থনৈতিক শক্তির জোরে নিজের সিস্টেম, জীবনশৈলী প্রচার করেছে শিক্ষাকে বিকৃত করে, অন্যদের তার ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল বানিয়ে। আমাদের পূর্বপুরুষদের অপমান করে, নিজস্ব সংস্কৃতি, গর্বকে হীন, তুচ্ছ মনে করে এরা পশ্চিমের অনুকরণ, তাকে তোষণ করেছে। দেশের গতিপথে এবং এখনকার পরিস্থিতিতেও এর বিরাট প্রভাব দেখা যাচ্ছে। গাঁধী আত্মনির্ভরতার ভিত্তিতে ভারতের পুনর্গঠন চেয়েছিলেন বলে সওয়াল করে ভাগবত বলেছেন, জাতির পিতা দৃঢ়ভাবে সামাজিক সাম্য, সম্প্রীতির পক্ষে ছিলেন, নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে কাজে পরিণত করেছিলেন, গোটা জীবন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মহাত্মার পবিত্র, নিবেদিত ও স্বচ্ছ জীবন, ভারতকেন্দ্রিক জীবনধারা অনুসরণের শপথ গ্রহণের আবেদন করে তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের জীবনেও এর প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এজন্য যাঁদের তাঁর সঙ্গে সামান্য মতভেদও ছিল, তাঁরাও তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন।