মিরাট: বেশ হাসিখুশি সুস্থ-সবল যমজ দুই সন্তান। করোনার গ্রাসে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই সন্তানকে হারাল গ্রেগরি পরিবার। গত ২৪ এপ্রিল হায়দরাবাদে জোফ্রেড ভার্গিস গ্রেগরি ও রালফ্রেড জর্জ গ্রেগরি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে দুজনেই কাজ করছিলেন।সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর  গত ১৩ ও ১৪ মে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে থেকে গেলে যমজের করোনার বিরুদ্ধে লড়াই। কয়েকদিন আগেই ২৪ তম জন্মদিন ছিল তাঁদের।
জোফ্রেড ও রালফ্রেডের ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে সবকিছু। তাঁরা ছিলেন অবিচ্ছেদ্য। তাঁদের বাবা-মা ছিলেন পেশায় শিক্ষক। বড় ছেলে নেলফ্রেড ও দুই যমজ সন্তানকে বড় করতে তাঁদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সন্তানের ভালো শিক্ষা দিতে কোনও চেষ্টার কসুর করেননি শিক্ষক দম্পতি। আর বড় হয়ে মা-বাবাকে স্বাচ্ছন্দ্য দিতে চেয়েছিলেন সন্তানরা। ইচ্ছে ছিল বিদেশে পাড়ি জমনোর। 
কোয়েম্বাত্তুরের করুনায়া ইউনিভার্সিটি থেকে বি টেক  সম্পূর্ণ করেন যমজ ভাই। শারীরিক গঠনও বেশ শক্তপোক্তই ছিল। দুজনেই ছয় ফুট লম্বা। 
মীরাটের ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় থাকতেন দুজন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর দুই ভাইকে পরিবার বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁরা ভেবেছিলেন, জ্বর কমে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। তাঁদের বাবা গ্রেগরি বলেছেন, আমরা অক্সিমিটার কিনেছিলাম। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-এ কমে গেলে চিকিৎসক ওদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা গত ১ মে ওদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। 
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা দুই তরুণকে আইসিইউ থেকে বের করে কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু গ্রেগরি তাঁদের আরও দুদিন পর্যবেক্ষণে রাখার অনুরোধ করেন। এরইমধ্যে গত ১৩ মে সেই মর্মান্তিক খবর পেলেন মা শোজা। টেলিফোন এল তাঁর কাছে। জানতে পারলেন, জোফ্রেড মারা গিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরই রালফ্রেড জোফ্রেডের স্বাস্থ্য নিয়ে খোঁজ নিয়ে বাবা-মাকে ফোন করেন। আর এরপর কয়েক ঘণ্টা পরে রালফ্রেডও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হেরে গেলেন। 
গ্রেগরি বলেছেন, তিনি জানতেন যে সুস্থ হয়ে ফেরার হলে দুজনেই একসঙ্গে ফিরত, না হলে কেউই না। একজনের কিছু হলে বরাবরই অন্যজনেরও তো তাই হত। মৃত্যুতেও তার ব্যতিক্রম হল না।