কাশ্মীর পুলিশের তরফে এ ব্যাপারে কোনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে ট্যুইট করে বলা হয়েছে, অপহরণের খবর সম্পর্কে তারা খোঁজখবর করছে। তবে এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল সূত্রের দাবি, এমন বেশ কয়েকজনকে গতকাল রাতে সোপিয়ান, কুলগাম, অনন্তনাগ ও অবন্তিপোরা থেকে জঙ্গিরা অপহরণ করেছে যাদের পরিবারের কেউ না কেউ পুলিশে চাকরি করেন।
সালাউদ্দিনের সংগঠন হিজবুলের প্রধান রিয়াজ নাইকু এই অপহরণের দায় স্বীকার করে এর পিছনে যুক্তি খাড়া করতে গিয়ে বলেছে, পুলিশই আমাদের এ পথে যেতে বাধ্য করেছে। এখন থেকে চোখের বদলে চোখ, ঘরের বদলে ঘর, পরিবারের বদলে পরিবার-এই নীতিতেই চলব। কাউকে মাফ নয়। প্রাণের মায়া থাকলে চাকরি ছাড়ুন পুলিশকর্মী, নইলে মৃত্যুর জন্য তৈরি থাকুন।
২০১০ থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় নাইকু ওরফে মহম্মদ বিন কাসিমকে দীর্ঘদিন ধরেই হাতে পেতে চাইছে নিরাপত্তাবাহিনী। তাকে এ++ সন্ত্রাসবাদীর তকমা দেওয়া হয়েছে।
এক পুলিশ কর্তা বলেন, সোপিয়ানের ট্রেঞ্জ এলাকা থেকে এক ডিএসপির ভাগ্নেকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসবাদীরা। গভীর রাতে আদনান আহমেদ শাহ নামে ২৬ বছরের যুবককে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। সোপিয়ানের ওয়াথু গ্রামে বাড়ি থেকে এক পুলিশ অফিসারের ছেলেকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসবাদীরা। ইয়াসির ভাট নামে আরেকজনও অপহৃত হয়েছেন। তাঁর বাবা বর্তমানে হজ সফর করছেন।
সন্ত্রাসবাদীরা সোপিয়ানের বারথিপোরায় এক কনস্টেবলের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্তাটি। আরেকটি ঘটনায় মধ্য কাশ্মীরের গান্দেরবলে এক পুলিশকর্মীর অপহৃত আত্মীয়কে ব্যাপক মারধর করে ছেড়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। অপহরণের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ কাশ্মীরে অ্যালার্ট জারি করেছে প্রশাসন।
রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি অপহরণের নিন্দা করেছেন। ওমর ট্যুইট করেছেন, ১১টা অপহরণ! উপত্যকার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। পাশাপাশি যারা নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ তুলে মুখ খুললেও জঙ্গিদের হাতে অপহরণের ব্যাপারে চুপ করে থাকেন, তাঁদেরও সমালোচনা করেন তিনি।
মেহবুবা বলেছেন, জঙ্গি বা নিরাপত্তাকর্মী, কারও পরিবারকেই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কষ্টের মধ্যে ফেলা উচিত নয়। সোপিয়ানে বুধবার চার পুলিশকর্মীর খুনের পর নিরাপত্তাবাহিনী কয়েকজন জঙ্গির বাড়ি ঢুকে হামলা, ভাঙচুর করে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে পিডিপি নেত্রীর ট্যুইট, সন্ত্রাসবাদী ও নিরাপত্তাকর্মীদের পরস্পরের পরিবারের ওপর চড়াও হওয়াটা খুবই নিন্দার। চলতি পরিস্থিতির আরও অবনতির লক্ষণ।