নয়াদিল্লি: জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ সাংবিধানিক অধিকার দেওয়া ৩৫এ ধারার বৈধতা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টে হবে গুরুত্বপূর্ণ শুনানি। এর আগে ৬ তারিখ এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ৩ বিচারপতির বেঞ্চে ১ বিচারপতি অনুপস্থিত থাকায় তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।


এই শুনানির বিরোধিতায় ও ৩৫এ ধারা নির্মূল হওয়ার আশঙ্কায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কাশ্মীর উপত্যকায় ২ দিনের বনধ ডেকেছে। বিজেপি ছাড়া সবকটি বিরোধী  রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে এই বনধকে। হিংসার আশঙ্কায় আজও কাশ্মীরের ৯টি থানা এলাকায় মোতায়েন রয়েছে কারফিউ, হুরিয়ত কনফারেন্স নেতাদের গৃহবন্দি করা হয়েছে।

দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উই দ্য সিটিজেনস ও ওয়েস্ট পাকিস্তান রিফিউজি অ্যাকশন কমিটি এই ৩৫এ ধারার বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। জম্মু কাশ্মীরের এই বিশেষ সাংবিধানিক অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে এর উচ্ছেদ চেয়েছে তারা। আর এই শুনানির বিরোধীদের বক্তব্য, ৩৫এ ধারাকে কাশ্মীর থেকে তুলে দেওয়া হলে তার সঙ্গে সঙ্গে ৩৭০ ধারাও নির্মূল হয়ে যাবে, জম্মু কাশ্মীর ও ভারতের মধ্যে যেটুকু পার্থক্য রয়েছে, তাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে সেই সঙ্গে।

উপত্যকার পরিস্থিতি দেখে জম্মু কাশ্মীর সরকার এই শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছে। তাদের বক্তব্য, এর ফলে উপত্যকায় শান্তি পুনরুস্থাপন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর আগেও বারবার এই দাবি করে শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে তারা। এবার রাজ্যে শিগগিরই হতে চলা পঞ্চায়েত ভোটের উল্লেখ করে তারা শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছে। শীর্ষ আদালত আজই জানিয়ে দেবে, তারা শুনানি পিছোবে কিনা।

১৯৫৪-র মে মাসে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংবিধানে যুক্ত হয় এই ৩৫এ ধারা। এই ধারা জম্মু কাশ্মীর বিধানসভাকে রাজ্যের স্থায়ী নাগরিকের সংজ্ঞা ঠিক করার অধিকার দেয়। যাঁরা স্থায়ী নাগরিক, তাঁরা রাজ্যে সম্পত্তির মালিকানা, সরকারি চাকরি ও বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার পাবেন। ফলে দেশভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তান থেকে চলে আসা লাখ লাখ মানুষ জম্মু কাশ্মীরের স্থায়ী নাগরিকের অধিকার পান না। সরকারি চাকরি বা কিছু কিছু সরকারি সুযোগ সুবিধে পান তাঁরা, লোকসভা নির্বাচনে ভোটও দিতে পারেন। কিন্তু রাজ্যের পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা নির্বাচন- কোথাও ভোট দেওয়ার অধিকার নেই তাঁদের। এর ফলে জম্মু কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পাওয়া মহিলারা রাজ্যের বাইরে বিয়ে করলে রাজ্যে নিজের সম্পত্তি রাখা সহ যাবতীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত হন তাঁরা। তাঁদের সন্তানরা স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট পান না, পান না মায়ের সম্পত্তির অধিকারও। জম্মু কাশ্মীরে থেকে উপার্জন করতেও দেওয়া হয় না তাঁদের।