নয়াদিল্লি: এক ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজের পরিবর্তে বেশি ফল দিচ্ছে দুই ভ্যাকসিনের একটি করে ডোজ। করোনা প্রতিরোধে কোভিশিল্ড-কোভ্যাকসিনের মিক্সড ডোজ জন্ম দিয়েছে নতুন ধারণার। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)।


দেশের কোভিড টিকাকরণের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে, করোনা মোকাবিলায় কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনকেই ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের অভাবে এখনও সবার টিকাকরণ সম্ভব হয়নি। ভ্যাকসিনেশনের চার মাস কেটে গেলেও টিকাকরণের মিক্সড ডোজ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। সেই পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে মিক্সড ডোজের প্রভাব জানতে গবেষণা শুরু করে আইসিএমআর। মোট ১৮ জনের ওপর পরীক্ষা করা হয় কোভিশিল্ড-কোভ্যাকসিনের মিক্সড ডোজের। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, করোনা রুখতে বেশি কাজ দিচ্ছে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনের একটি করে ডোজ।


উত্তরপ্রদেশে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বুঝতে চলে এই গবেষণা। যেখানে দেখা যায়, প্রথমে কোভিশিল্ড ও পরে কোভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তির শরীরে ইমিউনিটি অনেক বেড়ে গিয়েছে। সাধারণত কোনও একটি ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজ নিলে যা চোখে পড়ে না। প্রথম ভ্যাকসিনের ৬ সপ্তাহ পর কোভ্যাকসিন দিয়ে এই সুফল পাওয়া গিয়েছে। 


এই গবেষণা প্রসঙ্গে আইসিএমআর-এর 'এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিজেস'-এর প্রধান সমীরণ পান্ডা বলেন, ''এটা একেবারে স্বাভাবিক পরীক্ষা ছিল। অন্য ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরও সেভাবে পরিবর্তন দেখা যায়নি। বিষয়টি আইসিএমআর-কে জানাতেই তাঁরা এই নিয়ে গবেষণার কথা বলেন।'' পরবর্তীকালে এই দুই ধরনের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য বিভিন্ন বয়সের ১৮ জনের একটা দল বেছে নেয় 'ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ'। যার মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ৭ জন মহিলা ছিলেন। পাশাপাশি একই ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদেরও পরীক্ষা করা হয়।


গবেষণায় পর দেখা যায়, দুই ধরনের ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের শরীরে হাইপারটেনশন দেখা গিয়েছে। যদিও ইমিউনোলজির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে মিক্সড ডোজ নেওয়া ব্যক্তিরা। আলফা, বিটা, ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে বেশি কার্যকরী মিক্সড ডোজ। একই ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের চেয়ে তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রাও অনেক বেশি। তবে এখনই এই গবেষণাকে শিরোধার্য বলছেন না গবেষকরা। তাঁদের মতে, এ বিষয়ে আরও চর্চা প্রয়োজন।