নয়াদিল্লি: নির্ভয়াকাণ্ডে এক দোষীর মৃত্যুদণ্ডের রিভিউ পিটিশনের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।
২০১২ সালের নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা-মামলায় চার দোষী সাব্যস্তের অন্যতম অক্ষয় সিংহ মৃত্যুদণ্ডের রিভিউ পিটিশনের আবেদন করে শীর্ষ আদালতে। অক্ষয়ের আইনজীবী বেঞ্চের কাছে মৃত্যুদণ্ড খারিজের আবেদন করে দাবি করেন, তাঁর মক্কেলকে মিথ্যেভাবে ফাঁসানো হয়েছে। অক্ষয়ের আইনজীবী এ কে সিংহ বলেন, মৃত্যুদণ্ড হল শাস্তির আদি প্রথা। মৃত্যুদণ্ডের ফলে অপরাধী শেষ হয়, কিন্তু অপরাধ থেকেই যায়। অপরাধী ও দোষীদের জন্য মৃত্যুদণ্ড কোনও সতর্কবার্তা দেয় না।
আইনজীবী দাবি করেন, অক্ষয়কে মিথ্যেভাবে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তথ্যপ্রমাণ সবকিছু মনগড়া ছিল। অন্যদিকে, আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন সরকারি কৌঁসুলি।
উভয়পক্ষের যুক্তি শোনার পর অক্ষয়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, এর আগেও আদালতে অভিযুক্তদের পক্ষে একই যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছিল। সেগুলিও খারিজ করেছিল। তদন্তে গাফিলতির যে তত্ত্ব তুলে ধরা হয়েছে, তা নিম্ন আদালত খারিজ করেছিল। সেই রায় বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনে এটা বলা হয়েছে-- এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। কিন্তু, আদালত সেই যুক্তির যথার্থতা খুঁজে পায়নি। আগে, যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনও ভুল ছিল না।
এই যুক্তিতে অক্ষয়ের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত। এরপরই, অক্ষয়ের আইনজীবী রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করার জন্য তিন সপ্তাহ সময় চান। শীর্ষ আদালত সাতদিন মঞ্জুর করেছে।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, মঙ্গলবারই এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ব্যক্তিগত কারণে নিজেকে সরিয়ে নেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। ফলত, বুধবার বিচারপতি আর ভানুমতী, অশোকভূষণ ও এসএ বোপান্নাকে নিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করা হয়।
২০১৭ সালে অক্ষয় সহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করে অক্ষয়। ফাঁসির সাজা রদ ও কম শাস্তির আর্জি জানায় সে। প্রসঙ্গত, বাকি তিন দোষী সাব্যস্ত -- মুকেশ, পবন ও বিনয়ও একইভাবে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল। তাদের সবকটি আবেদন খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কাকতালীয়ভাবে, ওই তিনক্ষেত্রেই বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন আর ভানুমতী ও অশোকভূষণ।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের রাতে, চলন্ত বাসের মধ্যে ২৩-বছর বয়সী প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা করে ৬ জন। এই চারজন বাদে আরেক অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করে। ষষ্ঠজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় জুভেনাইল হোমে তিন বছর কাটিয়ে ছাড়া পায়।