গোপালপুর ও নয়াদিল্লি: আরও শক্তি বাড়িয়ে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত ‘তিতলি’। আবহাওয়া দফতরের খবর, বৃহস্পতিবার ভোরে ঘণ্টায় ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগে বেগে আছড়ে পড়বে ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। এই পরিস্থিতিতে উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে স্থানান্তরিত করার কাজ শুরু করেছে ওড়িশা প্রশাসন। একইসঙ্গে, মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছেন। গঞ্জাম, পুরী, খুরদা, কেন্দ্রপাড়া ও জগতসিংহপুরের কালেক্টরদের নির্দেশ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব উপকূলবর্তী এলাকায় থাকা মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে। রাজ্যের মুখ্যসচিব এ পি পাধি জানান, ইতিমধ্যেই গঞ্জামে মানুষদের সৈকত-নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যসচিব জানান, যে সব এলাকায় বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা, সেখানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও সেনার সাহায্য চাওয়া হয়নি। তবে প্রয়োজনে ডাকা হতে পারে।
পট্টনায়েক নির্দেশ দিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুর ঘটনা যথাসম্ভব কম যাতে হয়, তা নিশ্চিত করতে। এরজন্য আগেভাগে সাইক্লোন-শেল্টার তৈরি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের ফলে আগামী দুদিন উপকূলবর্তী অঞ্চলের সমস্ত স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে। বাতিল করা হয়েছে কলেজের ছাত্র সংগঠন নির্বাচন।
মৌসম ভবন সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বর্তমানে গোপালপুর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে তা ধীরে ধীরে পাড়ের দিকে এগোচ্ছে। জানা গিয়েছে, এখান থেকে উত্তর-উত্তরপশ্চিম অভিমূখে এগিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তা গোপালপুর ও কলিঙ্গপতনমে আছড়ে পড়বে। পরে, মুখ বদলে তা উত্তর-উত্তরপূর্ব হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে বেঁকে যাবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে গঞ্জম, গজপতি, বালেশ্বর, পুরী, খুরদা, কেন্দ্রপাড়া, নয়াগড়, কটক, ঢেঙ্কলন, কন্ধমাল, বৌধ, জজপুর, ভদ্রক ও জগতসিংহপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। বিশাখাপত্তনম, গোপালপুর ও পারাদ্বীপে অবস্থিত ডপলার রেডারের মাধ্যমে তিতলি-র গতি ও দিকের ওপর ক্রমাগত নজরদারি চলছে।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা, ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগে বেগে ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে তিতলি। সেইসঙ্গে, ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়। আরও জানা গিয়েছে, এই সময় সমুদ্র বীভৎস উত্তাল থাকবে। উঁচু ঢেউ উঠতে পারে। মৎস্যজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সমুদ্রে না যেতে।
ওড়িশার বিশেষ ত্রাণ কমিশনার জানান, যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত তারা। তবে, তেমন হলে সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হতে পারে। এর জন্য আগাম নৌসেনা ও বায়ুসেনাকে খবর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ৩০০ মোটরবোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য। এদিকে, আবহাওয়া পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একাধিক ট্রেনের সূচিতে বদল করেছে রেল।
রাত পোহালেই ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মোকাবিলার প্রস্তুতি ওড়িশার
Web Desk, ABP Ananda
Updated at:
10 Oct 2018 08:02 PM (IST)
NEXT
PREV
আজ ফোকাস-এ (aaj-focus-e) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -