নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে অলক বর্মা। সিবিআইয়ে তাঁদের দুজনের নজিরবিহীন অন্তর্কলহের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ও সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে ছুটিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। সিবিআই ডিরেক্টর পদে থাকা বর্মার হাত থেকে যাবতীয় ক্ষমতাও কেড়ে  নেওয়া হয়েছে।  পাল্টা সর্বোচ্চ আদালতে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করলেন তিনি। আজ বর্মার আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস কে কউল ও বিচারপতি কে এম জোসেফের বেঞ্চে বলেন, তাঁর মক্কেলের আর্জির দ্রুত শুনানি প্রয়োজন। তা মেনে নিয়ে ২৬ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করে বেঞ্চ।


কেন্দ্রের সিবিআই যুগ্ম ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাওকে তদন্ত সংস্থার প্রধান পদের ভার দেওয়ার সিদ্ধান্তেরও তীব্র সমালোচনা করেন বর্মা।

এদিকে সরকারের দাবি, বর্মা কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের (সিভিসি) সঙ্গে সহযোগিতা করেননি। তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে চলে যাওয়ার নির্দেশের সমর্থনে দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে সরকার বলেছে, সিবিআইয়ে এক ‘অস্বাভাবিক, অভূতপূর্ব’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এজেন্সির একেবারে প্রথম সারির কর্তাদের বিরুদ্ধে ‘মারাত্মক দুর্নীতির অভিযোগের’ জেরে।

সিবিআইয়ে গোষ্ঠী কোন্দল চরমে ওঠায় এই শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা, সুনাম মার খেয়েছে। পাশাপাশি তার ভিতরে কাজের পরিবেশও নষ্ট হয়েছে, যা তার সার্বিক চালচিত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

সরকারের দাবি, গত ২৪ আগস্ট সিভিসি সিবিআইয়ের ওপরমহলের কর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পায়। ২০০৩ এর সিভিসি আইনের ১১ ধারায় ১১ সেপ্টেম্বর তিনটি নোটিস দিয়ে সিবিআই ডিরেক্টরকে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় ফাইলপত্র, নথিপত্র ১৪ সেপ্টেম্বর জমা দিতে বলে সিভিসি। বেশ কয়েকটি মুলতুবির পরও নথি পেশের একাধিক সুযোগ দেওয়া হয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে সেগুলি জমা পড়বে বলে ২৪ সেপ্টেম্বর আশ্বাসও দেয় সিবিআই। কিন্তু বারংবার আশ্বাস দিয়েও, মনে করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সিবিআই ডিরেক্টর সিভিসি-কে ওই নথিপত্র, ফাইল, রেকর্ড জমা দেননি। সিভিসি দেখেছে, ডিরেক্টর মারাত্মক অভিযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া সত্ত্বেও সেগুসি তাদের না দিয়ে সহযোগিতা করছেন না। সিভিসি এও দেখেছে, সিবিআই ডিরেক্টর অসহযোগী, নির্দেশের পরোয়া না করার মানসিকতা দেখিয়েছেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাওয়া কমিশনের কাজকর্মে ইচ্ছে করে অন্তরায় সৃষ্টি করেছেন।

দিল্লি হাইকোর্ট গতকাল সিবিআইকে নির্দেশ দেয়, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ফৌজদারি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে।  আস্থানা ঘুষ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর চ্যালেঞ্জ করেছেন।