নয়াদিল্লি: স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দেশবাসীকে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদী সরকারের জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের। কেন্দ্রের সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারার বিধি বাতিল ও গোটা রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ওই গোটা অঞ্চলের মানুষের ‘বিরাট উপকার করবে’ বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, এবার সেখানকার বাসিন্দারাও দেশের বাকি অংশের মানুষের সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। ৭৩-তম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস, জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি ওই অঞ্চলের জনগণকে প্রভূত সুবিধা দেবে। তাঁরাও দেশের বাকি অংশের জনগণ যেসব সুযোগ-সুবিধা, অধিকার ভোগ করেন, সেসব পাবেন।
কেন্দ্রের গত ৫ আগস্টের সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসবাদে ক্ষতবিক্ষত গোটা এলাকার মানচিত্র বদলে দেবে, সেখানকার ভবিষ্যতও নতুন করে গড়বে বলে দাবি করা হচ্ছে। কেন্দ্রের পদক্ষেপ সংসদের দুই কক্ষের ছাড়পত্র পেয়েছে। রাষ্ট্রপতিও সম্মতি দিয়েছেন, যার ফলে ৩১ অক্টোবর জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আত্মপ্রকাশ করবে।
যে অতীত প্রজন্ম দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, তাঁরা স্বাধীনতাকে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতবদল হিসাবেই বিচার করেননি বলে উল্লেখ করে জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক বদলের প্রসঙ্গ টানেন কোবিন্দ। বলেন, তাঁরা স্বাধীনতাকে দেখতেন দেশ গঠন, জাতীয় নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর হিসাবে। প্রতিটি নাগরিক, পরিবার ও সামগ্রিক সমাজের জীবন উন্নত করাই তাঁদের লক্ষ্য ছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের চলতি আইনে সংশোধন, নতুন আইন প্রবর্তনও জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের উপকার করবে বলে অভিমত জানান তিনি। তোলেন তিন তালাক রোধ বিল প্রসঙ্গও। তাত্ক্ষনিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করে তৈরি হওয়া আইন ‘আমাদের মেয়েদের’ ন্যয়বিচার দেবে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, নতুন আইনগুলির মধ্যে আছে শিক্ষার অধিকার সংক্রান্ত প্রগতিশীল, আদর্শবাদী আইন ও বিধি, তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে সরকারি তথ্য পাওয়া, চিরকাল বঞ্চিত থাকা সম্প্রদায়গুলিকে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা প্রদান, তাত্ক্ষণিক তিন তালাকের মতো অসম প্রথা তুলে দিয়ে আমাদের মেয়েদের ন্যয়বিচার দেওয়া।
স্বচ্ছ, সামগ্রিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, অনলাইন বন্ধুত্বপূর্ণ কর ব্যবস্থা, বৈধ শিল্পোদ্যোগীদের আগের চেয়ে সহজে মূলধন পাওয়ার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আর্থিক পরিকাঠামো নির্মাণের ওপরও জোর দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ভারতের ইতিহাস, তার অতীত, ঐতিহ্য, ভবিষ্যত্ ও ভবিতব্য সহাবস্থান, সমন্বয়, সংস্কার, মিলনের নীতিতে চলে। আমাদের হৃদয়ের প্রসারণ, অন্যের আদর্শকে আলিঙ্গনের নীতির মধ্যে এগয়।
ভারত কখনই ‘একেবারে ক্ষীণ কণ্ঠস্বর’ শোনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে না বলে তিনি নিশ্চিত, এ কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি এও বলেন, ভারত কখনও তার প্রাচীন আদর্শ হারিয়ে ফেলবে না, তার ন্যয়বিচার, অ্যাডভেঞ্চার বোধও ভুলে যাবে না।
এপ্রিল-মে মাসে হওয়া সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি নির্বাচনে নতুন সূচনা, ভারতের সঙ্ঘবদ্ধ আশার পুনর্নবীকরণ হয়।
রাষ্ট্রপতি হিসাবে তিনি সারা দেশ, বিভিন্ন রাজ্য, এলাকা ঘুরেছেন, সব স্তরের মানুষের সঙ্গে মিশেছেন বলে জানিয়ে কোবিন্দ বলেন, ভারতীয়রা স্বভাব, পছন্দের দিক থেকে আলাদা হতে পারেন, কিন্তু তাঁদের একটাই স্বপ্ন, সেটা এক মুক্ত ভারতের স্বপ্ন। আজ তাদের স্বপ্ন দ্রুত বিকাশ, উন্নতির, কার্যকর, স্বচ্ছ শাসনের, তবুও আমাদের প্রতিদিনের জীবনে সরকারের সামান্য একটা ছাপ তারা চায়।
বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভাজনে বিরাট লাভ হবে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের, বললেন রাষ্ট্রপতি
Web Desk, ABP Ananda
Updated at:
14 Aug 2019 09:17 PM (IST)
যে অতীত প্রজন্ম দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, তাঁরা স্বাধীনতাকে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতবদল হিসাবেই বিচার করেননি বলে উল্লেখ করে জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক বদলের প্রসঙ্গ টানেন কোবিন্দ। বলেন, তাঁরা স্বাধীনতাকে দেখতেন দেশ গঠন, জাতীয় নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর হিসাবে। প্রতিটি নাগরিক, পরিবার ও সামগ্রিক সমাজের জীবন উন্নত করাই তাঁদের লক্ষ্য ছিল।
NEXT
PREV
আজ ফোকাস-এ (aaj-focus-e) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -