বেঙ্গালুরু: আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী সভায় পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়া মেয়েটিকে জামিন দিলেন না বেঙ্গালুরুর বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। সোমবার জামিনের আর্জির বিষয়টি স্থানীয় আদালতে ওঠা পর্যন্ত তাকে তিনদিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখা হবে।
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর সিএএ-বিরোধী সভায় আচমকা মাইক হাতে পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দেয় ১৯ বছরের অমূল্য লেওনা নামে মেয়েটি। ওয়েইসি দ্রুত তার মন্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করে জানিয়ে দেন, তিনি তা সমর্থন করেন না। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ধারায় দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা হয় অমূল্যকে। ডিসিপি বেঙ্গালুরু (পশ্চিম) বি রমেশ বলেন, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা, ১৫৩ এ ও বি (বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ, শত্রুতা ছড়ানো ) ধারায় তাত্ক্ষনিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অমূল্যকে জামিন না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। বলেছেন, অমূল্যকে জামিন দেওয়া উচিত নয়। ওর বাবাও বলেছেন, তিনি ওকে রক্ষা করবেন না। এটা এখন প্রমাণিত, ওর সঙ্গে নকশালদের যোগাযোগ আছে। ওর উপযুক্ত সাজা পাওয়া উচিত।

এদিকে এর মধ্য়েই গতকাল রাতে অমূল্যর চিক্কামাগালুরের বাড়িতে হামলা করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। পরে ঘটনাস্থলের ছবিতে তার বাড়ির জানালার কাচ ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে। হামলাকারীরা বিজেপির লোক বলে অমূল্যর বাবার দাবি। তিনি বলেছেন, দল বেঁধে এসেছিল ওরা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ। দলের নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজনের নাম দিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।
আজ অমূল্যকে বিচারক শামসিন অঙ্কুরের বাড়িতে পেশ করে পুলিশ। তিনি তাকে ১৪ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠান।
গতকালের সভায় পাকিস্তানপন্থী স্লোগান দিতেই মঞ্চ থেকে টেনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অমূল্যকে। তখন তাকে 'হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ' বলতে শোনা যায়। বেঙ্গালুরুর ফ্রিডম পার্কে হিন্দু-মুসলিম-শিখ-ইসাই ফেডারেশন নামে একটি সংগঠন সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল।

এদিকে এআইএমআইএম নেতা ওয়েইসির সামনে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান ওঠায় তার নিন্দা করা সত্ত্বেও তাঁকে নিশানা করেছে কর্নাটক বিজেপি। তারা ট্যুইট করেছে, সিএএ-বিরোধী কর্মী অমূল্য লেওনা বেঙ্গালুরুতে ওয়েইসির উপস্থিতিতেই পাকিস্তান জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়েছে। সত্যিটা হল সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের পিছনে পাকিস্তান ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সব শক্তির যৌথ প্রয়াস রয়েছে। পাকিস্তানকে যারা সমর্থন করে, তাদের পাকাপাকি সেখানেই চলে যাওয়া উচিত।