নয়াদিল্লি: আরও একটা ১৪ ফেব্রুয়ারি। আবারও সেই উপত্যকা। আর, এবারও সেই বিস্ফোরক নিয়ে হামলার ছক। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে আরডিএক্স ভর্তি গাড়ি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল এক জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। সেই ঘটনার দু’বছরের মাথায় উপত্যকায় ফের বড়সড় হামলার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। তবে এবার নাশকতার ছক বানচাল করে দিল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রায় সাত কেজি বিস্ফোরক সহ আরডিএক্স, সাতটি পিস্তল ও প্রচুর কার্তুজ। এরই সঙ্গে ফের সামনে এল পাকিস্তানি জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, জম্মুর একটি জনবহুল বাসস্ট্যান্ড থেকে সুহেল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছে থাকা ব্যাগ থেকেই মেলে বিস্ফোরক। জম্মুর আইজি মুকেশ সিংহ জানিয়েছেন, ‘সুহেল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার একটি ব্যাগে সাড়ে ৬ কেজি আইইডি ছিল। সুহেল চণ্ডীগড়ে থাকত। সে আল-বদর জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।’
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রঘুনাথ মন্দির, লাখদত্ত বাজার ও জনবহুল বাসস্ট্যান্ডে হামলা চালানোর ছক ছিল জঙ্গিদের। সুহেল ছাড়াও কাজি নামে আরেক জঙ্গিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিস্ফোরণের পর কাশ্মীরে যাওয়ার কথা ছিল ধৃতদের। তাহলে কি উপত্যকায় ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে জইশ-ই-মহম্মদ?
পুলিশ সূত্রে দাবি, নাম ভাঁড়িয়ে কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে সংগঠন বিস্তারের নীতি নিয়েছে লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো একাধিক পাক জঙ্গি সংগঠন। আল-বদর, দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট, লস্কর-এ-মুস্তাফার মতো একাধিক নতুন জঙ্গি সংগঠনের নাম উঠে আসছে। এরই মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি লস্কর-এ-মুস্তাফার কমান্ডার হিদায়েতুল্লা মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ সিংহ জানিয়েছেন, ‘বিগত কয়েক বছরে নতুন নতুন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন উঠে এসেছে। তারা স্থানীয় নাম নিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করছে। আমরা গত তিন থেকে চার দিন ধরে সতর্ক ছিলাম। তার ফলেই নাশকতার ছক বানচাল করে দিতে পেরেছি।’
এই জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে বিহারের কোনও নেটওয়ার্কও যুক্ত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ পুলিশের। কারণ, এদিন যে সাতটি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি বিহারের ছাপরা থেকে আনা হয়েছে বলে সন্দেহ। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। নাশকতার ছকের পিছনে আরও কারা যুক্ত ছিল, সেটা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।