আমদাবাদ: ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে অনেকেই প্রিয়জনদের নানা উপহার দেন। তবে গুজরাতের এক ব্যক্তি স্ত্রীকে যে উপহার দিলেন, তার চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই হতে পারে না। অসুস্থ স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে তাঁকে নিজের একটি কিডনি দিলেন ওই ব্যক্তি। ২৩-তম বিবাহবার্ষিকীতে এর চেয়ে ভাল কোনও উপহার আর হতে পারত না।


আজ আমদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়েছে। রীতা পটেলের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তাঁর স্বামী বিনোদ পটেলের কিডনি।


রীতা তিন বছর ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর শরীরের অবস্থা ক্রমশঃ খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। কিডনি বিকল হয়ে যাচ্ছিল। এই অবস্থায় স্ত্রীর জীবন বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেন বিনোদ। তাঁদের দু’জনেরই শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার পর চিকিৎসকরা কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে সম্মতি জানান। সেই অস্ত্রোপচার হল আজ।


গতকাল সংবাদসংস্থা এএনআইকে চিকিৎসক সিদ্ধার্থ মাভানি জানান, ‘রীতাবেন জটিল রোগ অটোইম্যুন কিডনি ডিসফাংশানে ভুগছেন। এই রোগ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা যে কোনও ধরনের সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে, সেটা বদলে যায়। উল্টে শরীরের স্বাস্থ্যকর অংশগুলিকে নষ্ট করে দেয় সেটি। রীতেবেনের ক্ষেত্রে এই রোগ তাঁর কিডনি নষ্ট করে দিয়েছে। রবিবার অস্ত্রোপচার হবে। এই প্রথমবার আমরা ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে অস্ত্রোপচার করব। আমরা সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে চাই।’


অস্ত্রোপচারের আগে বিনোদ জানান, ‘আমার স্ত্রী তিন বছর ধরে রোগে ভুগছে। এক মাস আগে ওর ডায়ালিসিস শুরু হয়। ওর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ওর বয়স ৪৪ বছর। স্ত্রীকে আমার কিডনি দেওয়ার মাধ্যমে আমি সমাজে এই বার্তা দিতে চাই, সবারই সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত এবং প্রয়োজনের সময় একে অপরের পাশে থাকা উচিত।’


অস্ত্রোপচারের আগে রীতা জানান, ‘আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। আমার স্বামী জানায়, আমরা যাতে একসঙ্গে বাঁচতে পারি, তার জন্য ও আমাকে একটি কিডনি দেবে। আমি ফের বাঁচতে পারব ভেবে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি। আমি স্বামী ও পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।’