ইম্ফল: তাঁদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চার মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন বলে জানালেন মণিপুরের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জয়কুমার। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, ‘সরকার যেভাবে আমাদের ও দলের প্রতি ব্যবহার করেছে, তার জন্যই আমরা পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দল ও আমাদের জন্য এটাই উপযুক্ত পন্থা বলে মনে হয়েছে। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এনপিপি-র চার এবং অন্য দলগুলির আরও পাঁচ বিধায়কের পদত্যাগের ফলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে এন বীরেন সিংহ সরকার। উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে রাজনৈতিক ডামাডোল তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার ফেলার জন্য কি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাবে এনপিপি? এ বিষয়ে জয়কুমার জানিয়েছেন, ‘অবশ্যই আমরা নতুন পদক্ষেপের কথা ভাবছি। বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার পর নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করব।’

জয়কুমার, উপজাতি ও পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী এন কায়িশি, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী লেপতাও হাওকিপ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী এল জয়ন্ত কুমার সিংহ ছাড়াও ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপি-র তিন বিধায়ক এস সুভাষচন্দ্র সিংহ, টি টি হাওকিপ ও স্যামুয়েল জেন্দাই। তাঁরা দল ও বিধায়ক পদ ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল বিধায়ক টি রবীন্দ্র ও নির্দল বিধায়ক ও শাহবুদ্দিনও সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছেন। রবীন্দ্র জানিয়েছেন, ‘আমরা তিন বছর সরকারের সঙ্গে ছিলাম। আমাদের গুরুত্ব দেওয়া হত না. আমরা যে প্রস্তাবগুলি দিতাম, সেগুলি কার্যকর হত না।’

২০১৭ সালের নির্বাচনে ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় ২৮টি আসন নিয়ে বৃহত্তম দল হয় কংগ্রেস। বিজেপি পায় ২১টি আসন। এনপিপি-র চার, এনপিএফ-এর চার, এলজেপি-র এক, তৃণমূল কংগ্রেসের এক, এক নির্দল ও কংগ্রেসের এক বিদ্রোহী বিধায়কের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে বিজেপি। এরপর আরও সাত কংগ্রেস বিধায়ক দল বদলে বিজেপি-কে সমর্থন করেন।

দল বদল করা প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক শ্যামকুমার সিংহের পদ খারিজ হয়ে যায়। সম্প্রতি আবার মণিপুর হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে সাত কংগ্রেস বিধায়ক দলবদল করেছেন, তাঁরা রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না। তাঁরা রাজ্যসভা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারবেন না। তার ফলেই বিপাকে পড়ে যায় মণিপুর সরকার। এবার অন্য দলগুলির বিধায়কদের পাশাপাশি দলীয় বিধায়করাও পদত্যাগ করায় বিজেপি সরকার পতনের মুখে। মণিপুরের প্রহ্লাদ সিংহ পটেল জানিয়েছেন, দলত্যাগী তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেবেন না।