নয়াদিল্লি:  ভারত বনধের দিন নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রতিবাদসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, রাফাল যুদ্ধবিমান, কৃষক আত্মহত্যা, মহিলাদের উপর অত্যাচার, বেকারত্ব সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মোদীর বিরুদ্ধে নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুলের দাবি, ঐক্যবদ্ধ বিরোধীরা আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করবে। মোদীর শাসনে ঘৃণা ছড়িয়ে দেশে বিভাজন ঘটানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পাল্টা বিজেপির দাবি, জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি, গুজব ছড়াতেই কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলির আজকের বনধ ডাকার উদ্দেশ্য। বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি কংগ্রেসকে তোপ দেগে বলেন, ক্ষমতায় থাকার সময় বারবার মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে এখন কুম্ভীরাশ্রু বর্জন করছে ওরা।


পেট্রল, ডিজেলের লাফিয়ে লাফিয়ে দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা ভারত বনধে আজ দেশের নানা রাজ্যে রাজ্যে বিরোধীদের বিক্ষোভ দেখায়। রাস্তায় নামেন স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতিও। কৈলাস মানসসরোবর সফর থেকে ফিরেই রাজঘাট পৌঁছে মহাত্মা গাঁধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাহুল। রাজঘাট থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। পা মেলান আরজেডি, এনসিপি, আম আদমি পার্টির নেতারাও। বিরোধী দলের লোকজন রাজ্যে রাজ্যে নানা জায়গায় পথ ও ট্রেন অবরোধ করেন। কংগ্রেসের দাবি, ২১টি দল তাদের বনধের ডাকে সাড়া দিয়ে সামিল হয়েছে।

ভাষণ দিতে গিয়ে মোদীকে তীব্র কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, ‘২০১৪ সালে দেশের মানুষ, যুব সমাজ, কৃষক ও মহিলাদের চাকরি ও সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন নরেন্দ্র মোদী। মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করে সরকার গড়তে সাহায্য করেন। তিনি বলতেন, ৭০ বছরে কিছুই হয়নি। আমরা চার বছরে সেই কাজ করব। এটা ঠিক, তিনি চার বছরে তিনি যা করেছেন, সেটা ৭০ বছরে হয়নি। যেখানেই দেখবেন, একজন ভারতীয় অন্য একজনের সঙ্গে লড়াই করছে।যেখানেই যাবেন, জাত-ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা হচ্ছে। একটি রাজ্যকে অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটাই বিজেপি-র সঙ্গে আমাদের পার্থক্য। দেশের মানুষ যেটা শুনতে চান, প্রধানমন্ত্রী সেটাই বলেন না। তিনি পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের আত্মহত্যা, বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, রাফাল চুক্তি নিয়ে নীরব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিজেপি-কে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।’





এই সমাবেশে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বলেন,  ‘মোদী সরকার এমন অনেক কিছু করেছে, যা দেশের স্বার্থের সহায়ক নয়। এখন তারা সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই সরকার বদলের সময় এসে গিয়েছে। সারা দেশের মানুষ বলছেন, তাঁরা সরকারের কাজে খুশি নন। সব দলকে মতবিরোধ সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের ঐক্য, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে যদি সব দল নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ দূরে সরিয়ে রাখে, তাহলেই সেটা সম্ভব।’