নয়াদিল্লি: লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল। আজ বিলের পক্ষে পড়ে ৯৯টি ভোট এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ৮৪টি। ভোটাভুটির সময় ‘উধাও’ একাধিক বিরোধী সাংসদ। এনডিএ সরকারের শরিক জেডিইউ সাংসদরাও ওয়াকআউট করেন। ফলে সরকারপক্ষের সুবিধা হয়ে যায়। প্রথমে সিলেক্ট কমিটিতে বিলটি পাঠানোর দাবি খারিজ করে দেয় সরকার। এ বিষয়ে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের বিপক্ষে ১০০ ভোট পড়ে এবং প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ৮৪টি। এবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সম্মতি জানালেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।

তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল পাশ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘অবশেষে একটি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় প্রথা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ঠাঁই পেল। সংসদ তিন তালাক রদ করে মুসলিম মহিলাদের প্রতি হয়ে আসা ঐতিহাসিক ভুল সংশোধন করল। এটি লিঙ্গসমতার জয়। এর ফলে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।’

আজ এই বিল নিয়ে রাজ্যসভায় সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিতর্ক চলে। বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ দাবি করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই বিল এনেছে সরকার। শাহ বানো মামলার কথা উল্লেখ করে তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘আজ আপনি অনেক কথা বলেছেন। ১৯৮৬ সালে আপনারা ৪০০টি আসন জিতেছিলেন। তারপর ৯টি লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। তার একটিতেও আপনারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এটা কেন হল ভাবুন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আপনারা ৪৪টি আসন পেয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে ৫২টি আসন পেয়েছেন। আমি নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রী, রাজীব গাঁধী সরকারের না। ২০টিরও বেশিন মুসলিম দেশে তিন তালাক আইন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাহলে একটি গণতান্ত্রিক দেশে কেন সেটা করা যাবে না? এটিকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত নয়। এটি মানবিক, মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতার বিষয়। বিজেপি মুসলিমদের ভোট কম পেতে পারে, কিন্তু আমরা তাঁদের দেশের অংশ বলেই মনে করি। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাসের নীতি অনুসারেই আমরা কাজ করছি।’

আজ ভোটাভুটির সময় জেডিইউ, এআইএডিএমকে সাংসদরা ওয়াকআউট করেন। এছাড়া এসপি, বিএসপি, টিআরএস, ওয়াইএসআর-কংগ্রেসেরও কয়েকজন সাংসদ রাজ্যসভায় ছিলেন না। ফলে বিল পাশ করানোর জন্য ম্যাজিক ফিগার ১২১ থেকে অনেকটাই কমে যায়। এর ফলে বিল পাশ করাতে সরকারের কোনও সমস্যাই হয়নি।