মুম্বই: ভারত-চিন লাদাখ সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই নাম না করে রাহুল গাঁধীর তোলা অভিযোগ কার্যত খন্ডন করলেন শরদ পওয়ার। লাদাখে ২০ ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে চিনের আগ্রাসনের কাছে নতি স্বীকার করে ভারতীয় ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। রাহুলের নেতৃত্ব গোটা কংগ্রেস দলই পূর্ব লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর গত ১৫ জুনের সংঘর্ষের পর থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে নিশানা করেছে। লাদাখে চিন সত্যিই ভারতের জমিতে ঢুকেছে কিনা, মোদি স্পষ্ট করেন বলুন, দাবি করেছে তারা।


কিন্তু রাহুল ও কংগ্রেসের দাবির মুখে বর্ষীয়াণ রাজনীতিক পওয়ার বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু নিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত নয়, ১৯৬২ সালে চিনা বাহিনী ভারতের বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড দখল করার পর কী হয়েছিল, মনে রাখা উচিত। ১৯৬২-তে প্রতিবেশী দেশটি প্রচুর ভারতীয় জমি কব্জা করার পর এই প্রথম এমন কোনও ঘটনা ঘটল।

ঘটনাচক্রে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন মহারাষ্ট্র বিকাশ আঘাদি সরকারের দুই শরিক কংগ্রেস ও পওয়ারের এনসিপি।

রাহুলের অভিযোগ নিয়ে চিনের দখল করে রাখা ও ভারতের নিজের বলে দাবি করা বিতর্কিত আকসাই চিন এলাকার প্রতি ইঙ্গিত করে সাতারায় এনসিপি সভাপতি  তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পওয়ার বলেন, ১৯৬২ সালে যখন চিন ৪৫ হাজার বর্গকিমি ভারতীয় ভূখণ্ড  দখল করে, তখন কী হয়েছিল, আমরা ভুলে যেতে পারি না। সুতরাং এ ধরনের অভিযোগ করার সময় অতীতের কথাও মাথায় রাখা উচিত। এটা জাতীয় স্বার্থের বিষয়, কারও এখানে রাজনীতি করা উচিত নয়।

প্রসঙ্গত, ভারত ও চিনের মধ্যে বিবাদ-বিতর্ক চলছে ৩৪৮৮ কিমি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নিয়ে। একদিকে গোটা অরুণাচল প্রদেশকেই দক্ষিণ তিব্বত বলে  দাবি করে চিন, অন্যদিকে ভারতের দাবি, বিতর্কিত ভূখণ্ডের মধ্যে পড়ছে ১৯৬২-র যুদ্ধের সময় চিনের দখলে যাওয়া আকসাই চিন।

গালওয়ান উপত্যকার বিবাদ নিয়ে মোদি সরকারকে দায়ী করা যায় না বলেও জানিয়ে দেন পওয়ার। তিনি বলেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকতে গেলে আমাদের জওয়ানরা চিনা সেনাদের ঠেলে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এটা কারও বা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ব্যর্থতা বলাটা ঠিক নয়। আমাদের জওয়ানরা সতর্ক  না থাকলে তো চিনাদের চেষ্টার কথা আমরা জানতেই পারতাম না। হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি হওয়ার মানেই হল আমাদের সেনারা সতর্ক ছিল, নয়তো তারা বেকুব বনে যেত। তাই এধরনের অভিযোগ তোলা ঠিক বলে মনে করি না। ভারত, চিনের মধ্যে সেনা জওয়ানদের এলএসি-তে বন্দুক, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করার চুক্তির প্রসঙ্গও তোলেন পওয়ার।