নয়াদিল্লি: বেআইনি ভাবে বিদেশি সম্পত্তি অর্জন সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন মামলার তদন্তের ব্যাপারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটে (ইডি) হাজিরা রবার্ট বঢরার। রবার্টকে এই মামলায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে সমন পাঠিয়েছিল ইডি, যা নিয়ে তাঁকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। স্বামীকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দপ্তরে পৌঁছে দেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। সাদা টয়োটা ল্যান্ড ক্রুসারে চাপিয়ে রবার্টকে রাজধানীর জামনগর হাউসে ইডি অফিসের বাইরে ছেড়ে দিয়ে কনভয় ছুটিয়ে চলে যান এসপিজি পরিবেষ্টিত প্রিয়ঙ্কা। রবার্টকে শুধু ইডি দপ্তরে নিয়ে যাওয়াই নয়, তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েও প্রিয়ঙ্কা মন্তব্য করেন, উনি আমার স্বামী, আমার পরিবার। পরিবারকে সমর্থন করি আমি।
রবার্টকে ইডি অফিসে পৌঁছে দিয়েই নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করতে এআইসিসি দপ্তরে যান তিনি। স্বামীর বিরুদ্ধে অবৈধ আর্থিক লেনদেন, বিদেশে বেআইনি সম্পত্তি করার অভিযোগে মামলা দায়ের হওয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদাহরণ কিনা, প্রশ্ন করা হলে সম্প্রতি পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ভার পাওয়া কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বলেন, সকলেই জানেন, বোঝেন কী চলছে।
ঘটনা হল, প্রিয়ঙ্কার নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তির পর উচ্ছ্বসিত রবার্টও ফেসবুক পোস্টে বলেছিলেন, অভিনন্দন পি, সবসময় তোমার জীবনের প্রতিটি পর্বে পাশে রয়েছি। নিজের সেরা অবদান রেখো।

এই প্রথম সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত ফৌজদারি অভিযোগের ব্যাপারে কোনও তদন্ত এজেন্সির সামনে গেলেন সনিয়া গাঁধীর মেয়ে-জামাই। রবার্ট এই মামলায় আগাম জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁকে ইডির তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির এক আদালত। তাঁকে লন্ডন থেকে ফিরেই বুধবার ইডি-তে হাজিরা দিতে বলেছিল আদালত। সরকারি সূত্রের খবর, বেআইনি আর্থিক লেনদেন রোধ মামলায় তাঁকে লন্ডনের কয়েকটি অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয়, মালিকানা ও লেনদেনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত করা হবে।
রবার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, লন্ডনে ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থমূল্যের একটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। ১২, ব্রায়ানস্টন স্কোয়ারের ওই সম্পত্তি কেনায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ঘিরেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হয়েছে।
ইডি আদালতকে জানিয়েছিল, লন্ডনে একাধিক নতুন নতুন সম্পত্তির ব্যাপারে তারা খবর পেয়েছে, যেগুলির মালিক রবার্ট। ইডি গত ডিসেম্বরে এই মামলায় নানা জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়, তাঁর সহযোগী মনোজ অরোরাকে জেরা করে। মনোজ স্কাইলাইট হসপিটালিটি এলএলপি সংস্থার কর্মী। রবার্টের যোগসূত্র আছে ওই সংস্থার সঙ্গে।
রবার্ট অবশ্য দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে বলে দাবি করেছেন।
রবার্টকে ইডির আওতায় থাকা আরেকটি আর্থিক লেনদেন মামলার তদন্তের ব্যাপারেও ১২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত সংস্থায় হাজিরা দিতে বলেছে রাজস্থান হাইকোর্ট।