মস্কো: বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে চলা গবেষণার মধ্যেই প্রথম করোনাভাইরাস টিকার উদ্বোধন করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।


বিশ্বে এটিই প্রথম করোনা ভ্যাকসিন। এই নথিভুক্তিকরণের ফলে শীঘ্রই এবার এই ভ্যাকসিনের গণ-উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


তবে, বিশেষজ্ঞরা এই ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দিহান। কারণ, এখনও ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রক্রিয়া চলছে। এর সুরক্ষা ও কার্যকারিতা এখনও চূড়ান্ত ছাড়পত্র মেলেনি। তার আগেই, ঘোষণা করা কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।


পুতিন জানিয়েছেন, দেশে তৈরি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের নথিভুক্তিকরণ করা হল। প্রথম টিকাগ্রহণ করেছেন তাঁর এক মেয়ে। রুশ প্রেসিডেন্টের দাবি, এই ভ্যাকসিনটি সব মাপকাঠিতে সাফল্যের সঙ্গে উতরেছে। এই ভ্যাকসিনটি করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।


পুতিন জানান, ভ্যাকসিনটি যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। তিনি জানান, তাঁর দুই মেয়ের একজনের শরীরে এই ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই প্রয়োগ করা হয়েছে এবং সে ভাল আছে বলেও জানান পুতিন।


রুশ প্রশাসন জানিয়েছে, প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক ও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এমন পেশার সঙ্গে যুক্তদের টিকা দেওয়া হবে। তারপর সাধারণ মানুষের শরীরে এর প্রয়োগ করা হবে।


গত ১৭ জুন ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয় প্রথমবার। তবে এই পরীক্ষার তিনটি পর্যায় রয়েছে, যা সেই থেকে চলছে।


গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অর্থাৎ যেখানে ভ্যাকসিন গবেষণা চলছে তারই ডিরেক্টর অ্যালেক্সেন্ডার গিন্টসবার্গ জানাচ্ছেন, অ্যাডিনো ভাইরাসের ভিত্তিতে তৈরি নির্জীব কণা ব্যবহার করবে এই টিকা৷


তাঁর মতে, এই ভ্যাকসিন নিয়ে যে যাই বলুক না কেন, এতে মানব শরীরে কোনও ক্ষতি হবে না৷ যে কণা এবং বস্তু তাদের নিজস্ব প্রজনন করতে পারে সেগুলিই জীবন্ত বলে মনে করা হয়।


বাকিগুলি যে সব কণা নিয়ে প্রশ্ন থাকে সেগুলি আর বৃদ্ধি পেতে পারে না৷টীকাকরণের পর অনেকের জ্বর আসতে পারে৷ কারণ শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য টীকা দেওয়ার পর এটা একটা সাইড এফেক্ট৷ তবে প্যারাসিটামল খেয়ে অতি সহজেই তার থেকে মুক্তি মিলবে৷


বিপুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে চলতি বছরেই প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে চলেছে রাশিয়া।