নয়াদিল্লি: অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডিএস হুডার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে মন্তব্যকে হাতিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ রাহুল গাঁধীর। ২০১৬য় নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কীর্তি নিয়ে ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে’ প্রচারের ফলে আখেরে সেনাবাহিনীর লাভ হয়নি বলে দাবি করেছেন হুডা। কংগ্রেস সভাপতি তাঁর বক্তব্য লুফে নিয়ে ট্যুইট করেছেন, প্রকৃত সেনা জেনারেলের মতো কথা বলেছেন আপনি। ভারত আপনাকে নিয়ে গর্বিত। মিঃ৩৬এর আমাদের সেনাবাহিনীকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে কাজে লাগানোয় বিন্দুমাত্র লজ্জা হয় না। উনি সার্জিক্যাল হামলাকে রাজনৈতিক মূলধন হিসাবে আর অনিল অম্বানির মূলধন ৩০০০০ কোটি টাকা বাড়াতে রাফাল ডিলকে ব্যবহার করেছেন।

হামেশাই রাহুল প্রধানমন্ত্রীকে ‘মিঃ ৫৬ ইঞ্চি ছাতার অধিকারী’ বলে কটাক্ষ করেন। তবে আজকের ট্যুইটে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমানের অনুষঙ্গ টেনে সামান্য বদলে মিঃ ৩৬ বলে তাঁকে বিদ্রূপ করেন তিনি।




ঘটনাচক্রে উরিতে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলার জবাবে সেনাবাহিনীর সার্জিক্যাল হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হুডা-ই। তিনি সে সময় ছিলেন নর্দার্ন আর্মি কমান্ডার। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে তিনি  বলেন,  সার্জিক্যাল হামলার সাফল্যে প্রাথমিক উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু তাকে ঘিরে লাগাতার প্রচার, বাড়তি উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে তোলা অনুচিত, অনাকাঙ্খিত। এই অতিরিক্ত উন্মাদনায় কি লাভ হয়েছে? আমি বলব, একেবারেই নয়। সামরিক অভিযানকে রাজনৈতিক লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যবহার করা ঠিক নয়। সামরিক অভিযানের সাফল্য নিয়ে রাজনীতি করলে ভাল হয় না। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, চন্ডীগড়ে গতকালের অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন কথাও বলেন যে, গোপনে সার্জিক্যাল হামলা চালালেই ভাল হোত। কেননা এ ধরনের যে কোনও সেনা অভিযানের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ট্যাকটিক্যাল হওয়াই বাঞ্ছনীয় নয়, স্ট্র্যাটেজিগতও হতে হবে, যা শত্রু শিবিরের মনোবলে জোর ধাক্কা দেয়।

নানা মহলের দাবি, বিজেপি যেহেতু গত ২৯ সেপ্টেম্বর ঘটা করে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস কর্মসূচি পালন করেছে, তাদের নেতারাও সদ্যসমাপ্ত কয়েকটি রাজ্যের ভোটপ্রচারে তার কৃতিত্ব দাবি করেছেন, তাই প্রাক্তন সেনাকর্তা এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তার বিরোধিতাই করেছেন।

রাহুল গত সপ্তাহে রাজস্থানে এক নির্বাচনী জনসভায় দাবি করেন, ইউপিএ আমলে সেনাবাহিনী তিনবার সার্জিক্যাল হামলা চালিয়েছিল, কিন্তু তা তাদের অনুরোধেই গোপন রাখা হয়। বলেন, জানেন কি নরেন্দ্র মোদির আমলের সার্জিক্যাল হামলার মতোই মনমোহন সিংহের সময়ও অভিযান হয়েছিল?  সেনাকর্তারা মনমোহন সিংহকে বলেন, পাকিস্তান যা করছে, তার জবাব দেওয়া দরকার আমাদের। তবে আমরা চাই, আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই তা যেন গোপন রাখা হয়।

মোদি উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে বিপর্যয় এড়াতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন রাহুল।