কলকাতা: 'টেরর (Terror) মাঝেমধ্যে অত্যন্ত ভাল ফল দেয়। তবে এই সন্ত্রাসের সঙ্গে অন্য সন্ত্রাস, সন্ত্রাসবাদীদের (terrorist) সন্ত্রাসের তফাৎ (different) রয়েছে', এবিপি আনন্দকে এক্সক্লুসিভ (Abp Ananda) সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly)। আর কী বললেন তিনি?


'এই সন্ত্রাস আলাদা'..
'একটি বিষয় আমি বিশ্বাস করি যে 'টেরর' মাঝে মধ্যে অত্যন্ত ভাল ফল দেয়। যেমন কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ আছে, খেলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার দাঁতের ব্যথা বা মাথার ব্যথা সেরে যাবে। অনেকটা ম্যাজিকের মতো কাজ হয়? টেররও মাঝেমধ্যে অত্যন্ত ইতিবাচক ফল দেয়। আমি জানি, আজ আমি শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু আধিকারিক ও শিক্ষকদের মনে খানিকটা টেরর তৈরি করতে পেরেছি। তাঁরা জানেন যে এঁর হাতে পড়লে আর রক্ষা নেই। সুতরাং তাঁরা এখন সঠিক ভাবে কাজ করেন।' তবে কি দুর্নীতি রুখতে কোনও সন্ত্রাসের কথা বলছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তাঁর ব্যাখ্যা, 'এই সন্ত্রাসের সঙ্গে, অন্য সন্ত্রাসের, সন্ত্রাসবাদীদের সন্ত্রাসের তফাৎ আছে। এই সন্ত্রাস হচ্ছে আইন প্রয়োগ করার। আমি কিন্তু আইন প্রয়োগ করব এবং একটি বিষয় বলি, ভারতবাসীকে কখনও প্রকৃত ভাবে শাসন করা হয়নি। ভারতবাসী প্রকৃত শাসনের অর্থই জানেন না। তা হলে তাঁরা এত শৃঙ্খলাহীন হতেন না। ভীষণ শৃঙ্খলাহীন আমরা। আমি তো আর শাসন করতে পারব না। আমি এইটুকু জুরিসডিকশন, হয়তো ২০০-৩০০ মামলা আসবে। কিন্তু তার মধ্যে আমি এটুকু বার্তা দেব, যে বিচারবিভাগ যদি হঠাৎ অত্যন্ত কড়া হয়ে ওঠে তা হলে তোমরা যারা বেআইনি কাজ করছ, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের মহাবিপদ। এইটুকু বার্তা আমি দিতে চাই।'


দুর্নীতি প্রসঙ্গে আরও যা বললেন...
'দুর্নীতি তো জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখছি। এটা প্রথম কথা। দ্বিতীয় কথা, আমি নিজেও বহু দিন বেকার ছিলাম। ফলে বেকারদের চোখের জল আমি দেখতে পাই। তাঁদের চোখের জলে বালিশ ভিজে যাওয়া সেটাও আমি দেখতে পাই। ফলে যখন বিচার করতে বসলাম, দেখলাম চোখের সামনে একটা অ্যাডমিটেড দুর্নীতি রয়েছে। অ্যাডমিটেড দুর্নীতি অর্থাৎ এক কর্তৃপক্ষ বলছেন, আমরা ভুল করেছি, আমরা এই সুপারিশ করি-ই নি। আর পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দাবি, আমরা ওদের সুপারিশ অনুযায়ী এ কাজ করেছি।  অর্থাৎ এক জন বলছে, আমরা এই সুপারিশ করিনি। আর অন্য জন অর্থাৎ বোর্ডের অ্য়াড হক কমিটির প্রধান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ওদের অনুমতি নিয়েই আমরা দিয়েছি। দুটো আলাদা হলফনামা আমার কাছে এল। এই যে একই জিনিসের দুটো আলাদা ভার্সন, এটি এতই স্ববিরোধী, যে আমি দেখলাম যে এখানে দুর্নীতি আছেই। দুর্নীতি ছাড়া এ হতে পারে না।' তথ্য বলছে, গত ১০ মাসে নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত ১০টি মামলায় তদন্তভার তিনি সটান তুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে আরও অনেক কিছুই বললেন তিনি।


আরও পড়ুন:'বেকারদের চোখের জল দেখতে পাই', এবিপি আনন্দে অকপট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়