প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নৌকা উল্টে যাওয়ার পর দার প্রথমে সাঁতরে পাড়ে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু অন্যরা নদীতে ডুবে যাচ্ছে দেখে তিনি ফের জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তাঁদের বাঁচাতে সক্ষম হন। কিন্তু নিজেকে আর বাঁচাতে পারেননি তিনি। নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে যান তিনি।
ঘটনার পরই উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে এই অভিযানে যোগ দেয় রাজ্য ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স। অন্ধকার নেমে আসায় শুক্রবার সেই অভিযান স্থগিত রাখতে হয়। পরের দিন শনিবার সকালে ওই সাহসী টুরিস্ট গাইডের দেহ উদ্ধার করা হয়। চিকিত্সা ও আইন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার পর তাঁর দেহ পরিবারের লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ডেপুটি কমিশনার (অনন্তনাগ) খালিদ জাহাঙ্গির বলেছেন, এটাই প্রকৃত কাশ্মীরীয়তের পরিচয়। এই কাশ্মীরীয়ত সৌভ্রাতৃত্ববোধের প্রতি ভালোবাসা ও অন্যের খেয়াল রাখার শিক্ষা দেয়। আর এই ঐতিহ্য অনুযায়ীই কাশ্মীরের সুপরিচিত অতিথিপরায়ণতার পরিচয় দিয়ে দার পাঁচজনের প্রাণ রক্ষা করেছেন।
রাজ্যের মুখ্য সচিবের নির্দেশে দারের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিহত ৩২ বছরের দারের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, বাবা-মা ও ভাই।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার নন্দন নগর থেকে আগত দম্পতিকে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। দারের জন্যই তাঁরা জীবন ফিরে পেলেন বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি।
অনন্তনাগের ডেপুটি কমিশনারর দারের নাম সাহসিকতার পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করেছেন।
মুখ্যসচিবও দারের সাহসিকতার প্রশংসা করে জেলা প্রশাসনকে তাঁর পরিবারকে সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যপালের পরামর্শদাতা তথা রাজ্যের পর্যটন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত খুরশিদ গনাই দারের মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সাহসী রউফ আহমেদ দারকে কুর্ণিশ। নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে তিনি ডুবন্ত নৌকার পর্যটকদের বাঁচিয়েছেন।