আগরতলা: দফতরে আমলাদের কী ধরনের পোশাক পরতে হবে, সে বিষয়ে ত্রিপুরা সরকারের নির্দেশে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সরকারি বৈঠকে ‘ক্যাজুয়াল’ পোশাক না পরে যাওয়ার নির্দেশকে অনেকেই সামন্ততান্ত্রিক বলে আখ্যা দিয়েছেন।


ত্রিপুরা সরকারের রাজস্ব, শিক্ষা এবং তথ্য ও সম্প্রচার দফতরের প্রধান সচিব সুশীল কুমার এক চিঠিতে আমলাদের জানিয়েছেন, ‘জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসকদের জেলার প্রধান হিসেবে নিশ্চিত করতে হবে, রাজ্যস্তরে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে হওয়া বৈঠকে যেন পোশাক বিধি মেনেই সবাই হাজির থাকেন। এই ধরনের বৈঠকে জিনস ও কার্গো প্যান্ট এড়িয়ে চলা উচিত।’

সুশীল আরও জানিয়েছেন, তাঁর তিন দশক ধরে আমলা হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তিনি কোনওদিন ডেনিমের মতো ক্যাজুয়াল পোশাক পরে কোনও আমলাকে সরকারি বৈঠকে হাজির হতে দেখেননি। বৈঠক চলাকালীন কয়েকজন আধিকারিককে মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠাতে ও পড়তে দেখা গিয়েছে। এই আচরণ অন্যদের প্রতি অসম্মানজনক। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আধিকারিকদের পকেটে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমলারা যাতে সরকারি বৈঠক বা অনুষ্ঠানে উপযুক্ত আচরণবিধি মেনে চলেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

পোশাক নিয়ে সরকারের এই ফতোয়ার বিষয়ে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দে বলেছেন, এই নির্দেশের মাধ্যমে বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সরকারি কর্মীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

সিপিএম মুখপাত্র গৌতম দাস বলেছেন, ‘পোশাক বিধির নামে কী পরা যাবে আর কোনটা পরা যাবে না, সেই নির্দেশ কীভাবে দেওয়া যেতে পারে? এই নির্দেশ নিন্দাজনক। আমাদের দেশে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক শাসন চলছে না, এটা গণতান্ত্রিক দেশ। এই ধরনের নির্দেশ ঔপনিবেশিক শাসনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’