হায়দরাবাদ: তেলঙ্গানায় তাক লাগানো পারফরম্যান্সের পর এই সাফল্যকে রাজ্যবাসীর প্রতি উত্সর্গ করে কে চন্দ্রশেখর রাও বললেন, এবার জাতীয় রাজনীতিতেও এই ফলের জেরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে তাঁর দল টিআরএস। দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে দল। দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন কেসিআর। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, এই জয় উত্সর্গ করলাম তেলঙ্গানার জনগণকে। এটা আমাদের পক্ষে ইতিবাচক জয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত যা খবর, তাতে কংগ্রেস মাত্র ১৫টিতে জিতেছে, চারটিতে এগিয়ে আছে, টিডিপি পেয়েছে মাত্র দুটি। এই প্রেক্ষাপটেই তিনি বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছি। আমরা দেখিয়ে দেব, জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করব আমরা। আজকের ফলে তেলঙ্গানা গোটা দেশকে পথ দেখাল। তেলঙ্গানা অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি রাজ্য হিসাবে উঠে এল।
ঘটনাচক্রে কেসিআর একটি অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি বৃহত্ ফেডেরাল ফ্রন্টের পক্ষে বেশ কিছুদিন ধরে সওয়াল করছেন। এই ফল তাঁর সেই তত্ত্বকে আরও জোরদার করবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
এদিকে বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ে তেলঙ্গানায় ইভিএমে কারসাজি করা হয়ে থাকতে পারে বলে সংশয় জানিয়ে ১০০ শতাংশ ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনার দাবি করল কংগ্রেস। তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি উত্তম কুমার রেড্ডি বলেন, ভোটগণনার যে বিকৃত প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে ইভিএমে কলকাঠি নাড়া হয়েছে, এমন প্রবল সন্দেহ রয়েছে। তাঁকে উদ্ধৃত করে কংগ্রেস সূত্রের খবর, সব কংগ্রেস প্রার্থীকে নিজেদের কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি লিখে ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনার দাবি করতে বলা হয়েছে। ভিভিপ্যাট বা পেপার ট্রেল যন্ত্র থেকে একজন ভোটার যে দলকে ভোট দিয়েছেন, তার প্রতীক সমেত স্লিপ বেরয়। সেটি মাত্র সাত সেকেন্ডের জন্য একটি ছোট উইন্ডোয় দেখা যায়। তারপরই একটি বাক্সে ঢুকে যায়। ভোটার কাকে ভোট দিয়েছেন, এর মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন সে ব্যাপারে।
এবার কংগ্রেস জোট করেছিল তেলুগু দেশম পার্টি, তেলঙ্গানা জন সমিতি, সিপিআইয়ের সঙ্গে। টিডিপি শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুটি মাত্র আসনে এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু জোটের বাকিরা বেশিরভাগ কেন্দ্রেই পিছিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি কংগ্রেস জোটের শরিক সিপিআইয়ের দাবি, ভোট কিনতে প্রচুর পরিমাণে মদ, টাকা বিলিয়েছে টিআরএস। কেসিআরের দলের জয়কে ‘নীতিগত নয়, টেকনিক্যাল জয়’ বলেছে তারা। সিপিআইয়ের জাতীয় সম্পাদক সুরাভরম সুধাকর রেড্ডি বলেন, এই ফল প্রত্যাশিত ছিল না। ভোট কিনতে বিশেষ করে প্রচারের শেষদিন প্রচুর টাকা ছড়ানো হয়েছে। তাতেই হয়তো এই ফল। তাছাড়া কেসিআর তেলঙ্গানা সেন্টিমেন্টের কার্ড আবার খেলেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, এবার অবাধ, ন্যয্য ভোট হয়নি। ওনার নৈতিক জয় হয়েছে বলে মনে করি না, এটা টেকনিক্যাল জয়।
কংগ্রেস জোটের শরিক টিডিপি-ও বলেছে, আত্মসমীক্ষা করে দেখতে হবে, এই ব্যর্থতার পিছনে কোন ফ্যাক্টর রয়েছে।