ভোপাল: পুলিশকর্মীদের মধ্যে একটি প্রবাদ চালু আছে, ‘পুলিশের নেই রবিবার, নেই পরিবার।’ ছুটি পাওয়ার সমস্যা এবং সারাক্ষণ কাজে ব্যস্ত থাকার কারণেই এই প্রবাদ চালু হয়েছে। এটা যে মিথ্যে নয়, ভোপালের একটি ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।


শ্যালকের বিয়েতে পাঁচদিন ছুটি চেয়েছিলেন ট্র্যাফিক কনস্টেবল দিলীপ কুমার আহিরওয়ার। তিনি এ মাসের ৭ তারিখ ছুটির দরখাস্তে লেখেন, ‘আমার শ্যালকের বিয়ে। এই কারণে ১১ ডিসেম্বর থেকে পাঁচদিনের ছুটি চাই। ছুটি না পেলে স্ত্রী রেগে যাবে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই আবেদনপত্র ভাইরাল। কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মনে হয়েছে, এই আবেদনপত্রের ভাষা আপত্তিকর। ছুটি তো মঞ্জুর হয়নি, একইসঙ্গে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দিলীপকে পুলিশ লাইনে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সিনিয়র অফিসার ইরশাদ ওয়ালি।

ভোপাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ উপেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, ‘ট্র্যাফিক বিভাগের এই কনস্টেবলের আচরণ ঠিক নয়। প্রথমত, তিনি এমন ভাষায় আবেদন জানিয়েছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিতীয়ত, তিনি এই আবেদনপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

অন্য এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, ‘গত ১১ মাসে ৫৫ দিন ছুটি নিয়েছেন দিলীপ। ফের তিনি ছুটি চান। সেটাও স্ত্রীর রেগে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে। সেই কারণেই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হল।’

ছুটির জন্য যে আবেদনপত্র পাঠান দিলীপ, সেটি তিনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সহকর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এরপর সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এই আবেদনপত্র দেখে মজা পাচ্ছেন। কিন্তু সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকরা এই আবেদনপত্র দেখে একেবারেই খুশি নন।

দিলীপের সহকর্মীরা বলছেন, তাঁরা এক বছরে ২ মাস ছুটি পান। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই পুরো সময় ছুটি পাওয়া যায় না। দিলীপ এত ছুটি চেয়েছেন বা নিয়েছেন বলেই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হল। তিনি পুলিশ লাইনে থাকাকালীন বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। কিন্তু তাঁর সার্ভিস রেকর্ডে এই শাস্তির প্রভাব পড়বে।

এদিকে, দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে ভোপালে ধর্নায় বসেছিলেন ৫০ জন কৃষক। পুলিশ তাঁদের জোর করে সরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। ট্রাক্টর-ট্রলি নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন কৃষকরা। মধ্যরাতে তাঁদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। যদিও পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, তাঁরা কাউকে সরিয়ে দেননি। কৃষকরা নিজেরাই সরে গিয়েছেন।