নয়াদিল্লি: নাসার চন্দ্রাভিযানের জন্য যে ১৮ জন মহাকাশচারীকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের অন্যতম ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজা জন ভুরপুতুর চারি। এর আগে নাসার মহাকাশ অভিযানে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তবে কল্পনা চাওলা ও সুনীতা উইলিয়ামস দু’জনেই মহিলা ছিলেন। এই প্রথম কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত পুরুষকে মহাকাশচারী হিসেবে বেছে নিল নাসা।


মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রাভিযানের জন্য নির্বাচিত মহাকাশচারীদের নাম ঘোষণা করেছেন। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আর্টেমিস মুন মিশন’। গ্রিসের পৌরাণিক দেবী আর্টেমিস। পুরাণ অনুসারে, তাঁর সঙ্গে চাঁদ ও শিকারের যোগ রয়েছে। তিনি সূর্যের দেবী অ্যাপোলোর যমজ বোন।

২০০৩ সালে মহাকাশ অভিযান থেকে ফেরার সময় মৃত্যু হয় কল্পনার। সুনীতা অবশ্য সাফল্যের সঙ্গে একাধিকবার মহাকাশ অভিযান শেষ করে ফিরে এসেছেন। এবার চারিও মহাকাশে যাবেন। তিনি এ বছরের জানুয়ারিতে সাফল্যের সঙ্গে ২ বছরের মহাকাশ অভিযান বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন। তাঁর পাশাপাশি আরও ১০ জন এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ‘আর্টেমিস মুন মিশন’-এ সামিল হওয়ার জন্য ২০১৭ সালে আবেদন করেন ১৮,০০০ জন। তাঁদের মধ্যে থেকে ১৮ জনকে বেছে নেওয়া হল।

৪১ বছর বয়সি চারি এর আগে মার্কিন বায়ুসেনার টেস্ট পাইলট ছিলেন। সেখান থেকে ২০১৭ সালে তাঁকে মহাকাশ অভিযান বিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য বেছে নেয় নাসা। ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করার পর এবার মহাকাশে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হলেন তিনি।

এই সম্ভাব্য মহাকাশচারীর বাবা শ্রীনিবাস চারি হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। পাঁচের দশকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তাঁর ছেলের জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি থেকে এরোনটিক্স ও অ্যাস্ট্রোনটিক্সে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি মার্কিন বায়ুসেনার টেস্ট পাইলট হন। এফ-৩৫, এফ-১৫, এফ-১৬, এফ-১৮, এফ-১৫ ই-র মতো যুদ্ধবিমান নিয়ে ২,০০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ওড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে চারির। তিনি যুদ্ধবিমান নিয়ে ইরাক ও কোরিয়া উপদ্বীপে গিয়েছেন।

নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে চাঁদের মাটিতে প্রথম মহিলা যাতে পা রাখতে পারেন, সেই লক্ষ্য নিয়েই এই অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। এর আগে নাসার পক্ষ থেকে চন্দ্রাভিযানে গিয়েছিলেন পুরুষরা। এবারের অভিযানে মহিলাদেরও সামিল করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে পুরুষ মহাকাশচারীরাও থাকবেন। চাঁদে মানুষের উপস্থিতি বাড়ানোই নাসার লক্ষ্য। ভবিষ্যতে মঙ্গল সহ মহাকাশের বিভিন্ন জায়গায় মহাকাশচারী পাঠানোরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।