নয়াদিল্লি: বিরোধীদের তীব্র আপত্তির মধ্যেই আজ লোকসভায় পাশ হয়ে গেল বেআইনি কার্যকলাপ (রোধ) সংশোধনী বিল। এই বিলে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ রোধ করার জন্য প্রয়োজন হলে যে কোনও রাজ্যে যেতে পারবেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এই বিষয়টি নিয়েই আপত্তি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, টিআরএস-এর মতো দলগুলি। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মানছে না কেন্দ্রীয় সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অবশ্য দাবি, সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর হাত শক্ত করার জন্যই এই বিল পেশ করা হয়েছে।


আজ লোকসভায় বিতর্কে যোগ দিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইউপিএ আমলে যদি সন্ত্রাস-প্রতিরোধের আইন সংশোধন করা উচিত কাজ হয়ে থাকে, তাহলে এনডিএ সরকারও ঠিকই করছে। সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইউএপিএ (সংশোধনী) আইনের অপব্যবহার হবে না। শুধু সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার জন্যই এই আইন কাজে লাগানো হবে। মতবাদের নামে কিছু লোক শহুরে মাওবাদের প্রচার করছে। তাদের প্রতি সরকারের কোনওরকম সংবেদনশীলতা নেই।’

পাল্টা কেন্দ্রকে তোপ দেগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এই বিল ব্যবহার করা হতে পারে। এই বিলের বিষয়বস্তু জনবিরোধী ও সংবিধান-বিরোধী। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক আইন। সরকারের বিরোধিতা করলেই যে কোনও ব্যক্তিকে দেশ-বিরোধী বলে দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী দলগুলি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে একমত না হলেই আমাদের দেশ-বিরোধী বলা হচ্ছে।’

এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বলেন, ‘জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র এবং ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স গ্রিডের বিষয়ে যখন সংশোধনী প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তখন গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধিতা করেছিলেন। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনা করা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তব্য। কিন্তু এখন গণতান্ত্রিক কাঠামো অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। ইউএপিএ (সংশোধনী) আইনের অপব্যবহার করা উচিত নয়। নিরীহ মানুষকে যেন অকারণে হেনস্থা না করা হয়।’ বসপা, টিআরএস, কংগ্রেসও এই বিলের বিরোধিতা করে।