বদায়ু: উত্তরপ্রদেশে ফের নৃশংসতা। মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষণই নেই। এবার উত্তরপ্রদেশের বদায়ু জেলায় ৫০ বছরের এক মহিলাকে গণধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ উঠল তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের মধ্যে একটি মন্দিরের পুরোহিতও আছেন। তিনি পলাতক। বাকি দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রবিবার রাতে বদায়ু জেলার একটি মন্দির চত্বরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগকারী মহিলা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছিলেন। গত কয়েকবছর ধরেই ওই মন্দিরে পুজো দিতে যেতেন। তাঁর বাড়ি ওই মন্দিরের কাছেই। অভিযুক্ত পুরোহিতও স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি কিছু ধর্মীয় আচার পালন করার কথা বলে ওই মহিলাকে মন্দিরে ডাকেন বলে অভিযোগ। নৃশংস অত্যাচার চালানোর পর অভিযুক্তরাই ওই মহিলাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসে। সেই সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত ছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।

বদায়ু গ্রামীণের পুলিশ সুপার রাঘবেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, ‘আমরা মঙ্গলবার এই ঘটনার কথা জানতে পারি। ওই মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তিন ব্যক্তি তাঁকে গণধর্ষণ করেছে। এই অত্যাচারের ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, গোপনাঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। গলায় ফাঁস দেওয়ার ফলে আঘাত পেয়েই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  তবে মূল অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ডি ধারায় গণধর্ষণ এবং ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

সংবাদসংস্থা এএনআই-কে বদায়ুর সিনিয়র পুলিশ সুপার সঙ্কল্প শর্মা জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্ত পুরোহিতকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের চারটি দল গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। এই ঘটনাকে ‘নির্ভয়াকাণ্ডের’ সঙ্গে তুলনা করে কংগ্রেসের ট্যুইট, ‘হাথরসের ঘটনাকে আড়াল করার জন্য আদিত্যনাথ যে মিশন চালু করেন, সেটা ব্যর্থ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ‘মিশন শক্তি প্রোগ্রাম’ চালু করেছেন এবং রাজ্যের মহিলাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

কিছুদিন আগেই হাথরসের নৃশংস ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয় সারা দেশ। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে যোগী প্রশাসন। কিন্তু তারপরেও যে উত্তরপ্রদেশের ছবিটা বদলায়নি, তা এই ঘটনাতেই প্রমাণিত হয়ে গেল।