নয়াদিল্লি: কোভিড ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে বাণিজ্য সংক্রান্ত মেধা স্বত্ত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবি বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (ডব্লুটিও)-তে জানিয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ভারতের এই দাবির পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। জো বিডেন প্রশাসন এক্ষেত্রে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দাবিকে সমর্থন করেছে। মারণ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।  মেধা স্বত্ব আইন প্রত্যাহার করা হলে, তা হবে নাগরিকদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড়সড় পদক্ষেপ।


মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথেরিন তাই বলেছেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে মেধা স্বত্ত্ব আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতিমারীর অবসান ঘটাতে কোভিড-১৯ টিকার ক্ষেত্রে ওই বাণিজ্য সংক্রান্ত সুরক্ষা প্রত্যাহারের দাবিকে সমর্থন করে আমেরিকা।


তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংকট। কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজিরবিহীন পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।


আমেরিকার সমর্থনের ফলে ডব্লুটিও-র জেনারেল কাউন্সিলের পক্ষে এই প্রস্তাবের অনুমোদন সহজ হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন (হু)-র প্রধান টেড্রোস অ্যাধানম ঘেব্রেয়েসাস আমেরিকার এই পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকার এই পদক্ষেপ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ।


তিনি বলেছেন, এই আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংকটের মোকাবিলায় মেধা স্বত্ত্ব আইন প্রত্যাহারে  সমর্থন আমেরিকার নেতৃত্বদানের প্রতিফলন। টিকার ক্ষেত্রে সমতা এনে দেওয়ার লক্ষ্যে আমেরিকার এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপে তিনি উচ্ছ্বসিত বলে জানিয়েছেন হু প্রধান।


উল্লেখ্য, ভারতের করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরি করেছে। প্রত্যেকদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। বাড়তে মৃতের সংখ্যা। এরমধ্যে রয়েছে ভ্যাকসিনের অভাব। আমেরিকার এই পদক্ষেপ স্বাভাবিকভাবেই ভারতকে স্বস্তি এনে দেবে। কারণ, ডব্লুটিও-তে ওই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যাবে। এই প্রস্তাব বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় প্রথম পেশ করে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা গত অক্টোবরে।


তবে মার্কিন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেধা স্বত্ত্ব প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা সময়সাপেক্ষ।
বেশ কয়েকমাস ধরেই সাময়িকভাবে করোনা টিকার ক্ষেত্রে মেধা স্বত্ত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবি উঠছে ডব্লুটিও-তে। কিন্তু এই প্রস্তাবের ঘোরতর আপত্তি করে এসেছে বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ও তাদের দেশগুলি। তাদের দাবি, উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পেটেন্ট কোনও বাধা নয়। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে উদ্ভাবনের ক্ষেত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।