শামলি: ‘তারিখ পে তারিখ...।’ একটি জনপ্রিয় হিন্দি ছবির সংলাপ আক্ষরিক অর্থেই এক বৃদ্ধের জীবনে সত্যি হয়ে দেখা দিল। ভারতীয় বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা যে কতটা সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেটা চরম উপলদ্ধি করলেন উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার এক ৮৫ বছরের ব্যক্তি।


শামলি জেলার হারান গ্রামের বাসিন্দা ৮৫ বছর বয়সি ধর্মপাল সিংহের বিরুদ্ধে ১৯৮৬ সালে নিজের বাড়িতে বেআইনিভাবে কীটনাশক তৈরির অভিযোগ ওঠে। ধর্মপালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ৩৫ বছর ধরে আদালতে চারশোরও বেশি শুনানি চলার পর অবশেষে বেকসুর খালাস পেলেন এই বৃদ্ধ। প্রমাণের অভাবে তাঁকে বেকসুর খালাস করার কথা ঘোষণা করেছেন অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা বিচারপতি।


আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এই বৃদ্ধ বলেছেন, ‘আমার কাঁধ থেকে বিশাল বোঝা নেমে গেল বলে মনে হচ্ছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালানোর ফলে সুনাম, অর্থ, মানসিক শান্তি হারিয়েছি। ন্যায়বিচার পেতে দীর্ঘদিন সময় লাগল। তবে শেষপর্যন্ত সত্যের জয়ই হয়েছে। এতে আমি খুশি। আমাকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য মহামান্য আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আদালতে ৪০০ বারের মতো শুনানি হয়েছে। এতদিন ধরে আমাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। তার ফলে আমার বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর সময়ও নষ্ট হয়েছে।’


ধর্মপাল মামলা থেকে রেহাই পেলেও, তাঁর ভাই কুঁয়ারপালের অবশ্য সেই সৌভাগ্য হয়নি। একই মামলায় তিনিও অভিযুক্ত ছিলেন। সেই দায় নিয়েই পাঁচ বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়। আইনি জটিলতা থেকে রেহাই পাওয়ার সৌভাগ্য তাঁর হয়নি।


এই মামলায় অপর এক অভিযুক্ত লিয়াকত আলি দীর্ঘদিন ধরেই পলাতক। বেশ কিছুদিন আগে আদালত তাঁকে পলাতক ঘোষণা করেছে।


১৯৮৬ সালের নভেম্বরে থানা ভবন পুলিশ দুই ভাই ধর্মপাল ও কুঁয়ারপাল এবং বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তাঁদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স ছাড়াই বাড়িতে কীটনাশক তৈরির অভিযোগ আনা হয়। পুলিশ দাবি করে, একটি ট্রাকে তোলার ২৬ ব্যাগ কীটনাশক উদ্ধার করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্তদের ১৮ দিন জেলে কাটাতে হয়। এরপর তাঁরা জামিনে ছাড়া পান। তবে এত বছর ধরে মামলা চলছিল।