নয়াদিল্লি: প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে খাঁটি ভদ্রলোক বলে উল্লেখ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি স্মৃতিচারণা করে ব্লগে লিখেছেন, ‘অনেকেই অটলজির প্রয়াণকে একটি যুগের অবসান বলছেন। তবে আমি মনে করি, তিনি যে যুগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, সেটা চলছে। তাঁর নামের মতোই রাজনৈতিক যাত্রার প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সঙ্কল্প। তাতে তিনি অটল ছিলেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে প্রথম কয়েক দশকে কংগ্রেসের একার দাপট ছিল। অটলজি একটি বিকল্প তৈরি করেন। সেটা গত দু’দশকে কংগ্রেসের চেয়ে বৃহত্তম হয়ে উঠেছে। (লালকৃষ্ণ) আডবাণীজির সঙ্গে মিলে তিনি কেন্দ্রে ও রাজ্যে দ্বিতীয়সারির নেতা তৈরি করেন।’


জেটলি আরও লিখেছেন, ‘অটলজি সবসময় নতুন চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানাতেন। তিনি জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন। বন্ধুদের মতোই বিরোধীদের সঙ্গেও সহজেই আলোচনা করতেন তিনি। কোনও তুচ্ছ বিতর্কে জড়াতেন না। ১৯৯৮ সালে পোখরানে পরমাণু পরীক্ষা তাঁর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিস্থাপনের উদ্যোগও নেন। আবার যখন আগ্রাসনের প্রয়োজন ছিল, তখন কার্গিলে পাকিস্তানকে আঘাত করেছিলেন। পোখরান ও কার্গিল তাঁর সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য। আর্থিক ক্ষেত্রে তিনি উদারপন্থী ছিলেন। জাতীয় সড়ক, গ্রামীণ সড়ক, উন্নত পরিকাঠামো, নতুন টেলিকম নীতি, নতুন বিদ্যুৎ নীতি এর প্রমাণ।’

বাজপেয়ীর চরিত্র প্রসঙ্গে জেটলি লিখেছেন, ‘অটলজি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি উদার ছিলেন। তিনি সমালোচনা গ্রহণ করতেন। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের সৃষ্টি ছিলেন। তাই তিনি সর্বসম্মতিতে বিশ্বাস করতেন। তাঁর মধ্যে আক্রোশ ছিল না। যাঁরা তাঁর সঙ্গে একতম হতেন না, তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা করতেন। বিরোধী শিবিরে থাকুন বা সরকারে, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে অদ্বিতীয় সংযোগকারী ছিলেন। তাঁর বক্তব্যে রসিকতা থাকত। তাঁর শব্দচয়ন, তাৎক্ষণিক জবাব, অভিব্যক্তির মধ্যে কবিতার মাধ্যমে সবচেয়ে জটিল বিষয়ও সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিতেন।’