কলকাতা: পর্যবেক্ষককে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় আর কোনও ‘পাওয়ার পয়েন্ট’ তৈরি হবে না, সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল পার্টি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে পর্যবেক্ষক পদ। যার ফলে জেলায় জেলায় কর্তৃত্ব কমতে চলেছে শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রথম সারির নেতামন্ত্রীদের।




পর্যবেক্ষক মহলের মতে, রাজস্থান, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের সাম্প্রতিকতম রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মূলত অনুগামীদের নিয়ে দলবদলের প্রবণতা রুখতে মমতার এই ‘মাস্টারস্ট্রোক’। এতদিন পর্যন্ত জঙ্গলমহলের দায়িত্বে ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। দুই মেদিনীপুর সহ, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ ও মালদার পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। দলের ‘নব সংস্কার’ করে এই পর্যবেক্ষক পদই তুলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলে শুভেন্দু সহ দুই দিনাজপুরের ওপর থেকে কর্তৃত্ব কমল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। পাহাড়ে যে কর্তৃত্ব ছিল মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের, তাও আর রইল না। একই সঙ্গে হাওড়া, হুগলির মতো কলকাতার কাছাকাছি জেলার ওপর থেকে দাপট কমে গেল ফিরহাদ হাকিমেরও।



পরিবর্তে যা হল, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিমের মতো নেতাদের কোর কমিটিতে ঢুকিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্র ধরে রাখলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখযোগ্যভাবে দলের এই ‘স্টিয়ারিং’ কমিটিতে জায়গা হয়নি অরূপ বিশ্বাসের। পরিবর্তে ২১ সদস্যের সমন্বয় রক্ষাকারী কমিটিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। অন্যদিকে হাওড়ায় রাজীব-অরূপের (রায়) দ্বন্দ্ব ঘুচিয়ে লক্ষ্মীরতন শুক্লকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্য কমিটিতে। রাজ্য কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে ছত্রধর মাহাতোর মতো নেতাকেও। দায়িত্ব বেড়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর। আলিপুরদুয়ার জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিপিএমের একদা ‘ব্লু আইড বয়’ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁকে রাজ্য সম্পাদকের পদও দিয়েছে তৃণমূল।