নয়াদিল্লি: একুশ শতকেও বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী রোগের নাম যক্ষ্মা। চিকিৎসা শাস্ত্রে যতই উন্নতি হোক না কেন, এখনও যক্ষ্মার বিপদ দূর করা সম্ভব হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন ৪,০০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় যক্ষ্মায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, সারা বিশ্বে অন্তত ১০০ কোটি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। মোট আক্রান্তের ২৭ শতাংশ ভারতেই। যক্ষ্মা দূর করা শুধু কঠিনই নয়, প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২৫-এর মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০৩০-এর মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তবে ভারত তার পাঁচ বছর আগেই যক্ষ্মা দূর করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইছে।


স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, যক্ষ্মা দূর করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করা হয়। ১২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগীদের চিহ্নিত করে তাঁদের উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার সময় তাঁরা যাতে পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন, তার জন্য ৭৫০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে একযোগে কাজ করছে আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক, শিশু ও নারীকল্যাণ মন্ত্রক, সামাজিক ন্যায় ও সশক্তিকরণ মন্ত্রক, শ্রম ও নিযুক্তি মন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মন্ত্রকগুলির মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। 


২০১৯ সালে সারা বিশ্বের যক্ষ্মা সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পেয়েছে ভারত। এদেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার কমেছে। ২০১৭ সালে ভারতে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৭.৪ লক্ষ। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যাটা কমে হয় ২৬.৯ লক্ষ। প্রতি এক লক্ষ নাগরিকের মধ্যে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৭ সালে ছিল ২০৪ জন। সেখানে ২০১৮ সালে এই সংখ্যাটা কমে হয় ১৯৯।