নয়াদিল্লি: আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দিনের আলোর মুখ দেখতে পারে চারটি শ্রম বিধি। কারণ, এই আইনগুলি রূপায়ণের ব্যাপারে আগ্রহী কেন্দ্র। এই বিধিগুলি রূপায়ণ হলে চাকরিজীবীদের হাতে পাওয়া বেতনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। বাড়তে পারে নিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে বরাদ্দ বাড়তে পারে। 
এই শ্রম বিধি কার্যকর হলে কর্মীদের বেসিক পে ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসেবের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হবে।
শ্রম মন্ত্রক  ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস, পারিশ্রমিক, সামাজিক নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষ ও কাজের শর্তের ক্ষেত্রে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে চার বিধি রূপায়নের পরিকল্পনা করেছিল। ৪৪ টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের সংস্কার সাধনের জন্যই এই চার শ্রম বিধি। 
মন্ত্রক এই চার বিধির আওতায় নিয়মকানুনও চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু অনেক রাজ্য তাদের ক্ষেত্রের মধ্যে এই নিয়মগুলি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি না করায় ওই বিধিগুলি কার্যকর করা যায়নি। 
শ্রম সংক্রান্ত বিষয়টি রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ তালিকায়। ফলে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে এই আইনের রূপায়নের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়কেই এই বিধিগুলির নিয়ম সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।
সূত্র উল্লেখ করে সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, অনেকগুলি বড় রাজ্যই এই চার বিধির আওতায় নিয়মকানুন চূড়ান্ত করেনি। তবে এ জন্য কেন্দ্র অনন্ত কাল অপেক্ষা করতে পারবে না। সেজন্য কেন্দ্র আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বিধিগুলি রূপায়নের পরিকল্পনা করছে। কারণ, নতুন আইনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোম্পানি বা সংস্থাগুলিকে কিছুটা সময় দিতে হবে। 
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই খসড়া আইন প্রকাশ করেছেষ এই রাজ্যগুলি হল-বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, ওড়িশা, পঞ্জাব, গুজরাত, কর্ণাটক ও উত্তরাখণ্ড। 
নতুন শ্রম বিধি অনুসারে,ভাতার সর্বোচ্চ সীমা হতে পারবে মোট বেতনের ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ, মোট বেতনের অর্ধেক হবে মূল পারিশ্রমিক। প্রভিডেন্ট ফাণ্ডে বরাদ্দ মূল বেতনের শতকরা হার অনুসারে হিসেব করা হয়, যার মধ্যে থাকে মূল বেতন, মহার্ঘ ভাতা। 
প্রভিডেন্ট ফাণ্ড ও আয়কর দায় কমাতে নিয়োগকারী সংস্থাগুলি পারিশ্রমিকে বিভিন্ন ভাতায় ভাগ করে থাকে। নতুন শ্রম বিধিতে প্রফিডেন্ট ফাণ্ডে দেয়র পরিমাণ মোট বেতনের অনুপাতে স্থির করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন বিধি কার্যকর হলে কর্মীদের টেক হোম স্যালারি (হাতে পাওয়া বেতন) কমতে পারে। অন্যদিকে, বহুক্ষেত্রেই নিয়োগকারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে দেয় অর্থের পরিনাণ বেড়ে যেতে পারে। 
এই বিধি রূপায়িত হলে নিয়োগকারীদের কর্মীদের বেতনের পুণর্গঠন করতে হবে। এর পাশাপাশি, নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন কোড অনুসারে, যে সব সংস্থার কর্মীর সংখ্যা ৩০০-র মধ্যে, তাদের ছাঁটাই বা কারখানা বন্ধ করতে সরকারের অনুমতি লাগবে না। এতে ইজ অফ ডুয়িং বিজনেসের উন্নতি হবে।