কলকাতা: লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন বিতর্কিত মন্তব্য। কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার ডেপুটি বিরোধী দলনেতাকে 'নির্বোধ' বলে কটাক্ষ। জাতীয় রাজনীতিতেও এবার বিতর্কে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। লোকসভায় দাঁড়িয়ে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে বিদ্ধ তিনি। প্রশ্ন উঠছে তাঁর আচরণ নিয়ে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেষ পর্যন্ত সেই নিয়ে সাফাই দিলেন। (Abhijit Ganguly)
বুধবার লোকসভায় বাজেট নিয়ে আলোচনা চলাকালীন প্রথম বার বলতে ওঠেন অভিজিৎ। বাজেটের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। বাজেট নিয়ে খামোকা বিরোধীরা চেঁচামেচি করছেন বলেও মন্তব্য করেন। এর পর বিশদে ব্যাখ্যা করতেও যান। এতে সাংসদদের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার থেকে অভিজিৎ অনেক বেশি সময় নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যে চটেন অভিজিৎ। বলেন, "কাউকে আমার বক্তৃতা শোনার জন্য বসে থাকতে বলিনি আমি।" (Lok Sabha)
সেই সময় এবিপি আনন্দেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টেনে অভিজিৎকে কটাক্ষ করেন গৌরব। মহাত্মা গাঁধী এবং নাথুরাম গডসের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন তিনি, জানতে চান। আর তাতেই চটে যান অভিজিৎ। তিনি বলেন, "নির্বোধের মতো কথা বলবেন না। আপনি গাঁধীও নন, গডসেও নন।" এতে বিরোধীরা তীব্র প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও তীব্র প্রতিবাদ জানান। সবমিলিয়ে তেতে ওঠে অধিবেশন।
অভিজিৎ যখন গৌরবকে কটাক্ষ করেন, সেই সময় স্পিকারের আসনে ছিলেন দিলীপ সাইকিয়া। বিরোধীরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করলে আসনে ফিরে আসেন স্পিকার ওম বিড়লা। স্পিকারকে অভিজিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানান বিরোধী সাংসদরা। এতে কী হয়েছে, সরাসরি গৌরবের কাছে জানতে চান স্পিকার। গৌরব জানান, ওই শব্দের পুনরাবৃত্তি করতে চান না তিনি। কিন্তু অভিজিৎ অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেছেন। পদক্ষেপ করতে হবে স্পিকারকে।
অভিজিতের বক্তৃতার সময় লোকসভায় তাঁর পাশের আসনেই বসেছিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তর্ক-বিতর্ক চলাকালীন তাঁকে হাসতে দেখা যায়। এর পর বিরোধীদের তরফে অভিজিৎকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি ওঠে। এর পর বৃহস্পতিবার লোকসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, "আমরা সবাই সংসদের সদস্য। কোনও সদস্যের মন্তব্যে সংসদের গরিমা নষ্ট হলে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের। সরকার পক্ষের হোন বা বিরোধী পক্ষের সদস্য হোন, কেউ যদি এমন কোনও টিপ্পনি করেন বা এমন ভাষা প্রয়োগ করেন, যা সংসদীয় ঐতিহ্যের পরিপন্থী, সংসদের গরিমা যাতে আহত হয়, সংসদের রেকর্ড থেকে তা বাদ দেওয়ার পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার অধিকারও আছে স্পিকারের। সরকারের তরফে বলছি, কাল আমি ছিলাম না লোকসভায়। চাইলে আমি আড়াল করতেই পারি, কে উস্কানি দিয়েছে, তাতেও যাচ্ছি না। কিন্তু সংসদের অন্দরে এমন আচরণের জন্য স্পিকারের অবশ্যই পদক্ষেপ করা উচিত।"