কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: এবিপি আনন্দ'তে খবর সম্প্রচারের জের। ১২ বছর পর পেনশন পাচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা ইরা বসু। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্যালিকাকে নিয়ে খবর প্রকাশের ১০দিনের মাথাতেই মিলল পেনশনের ছাড়পত্র। জানা গিয়েছে, অবসরের ১২ বছর পেনশনের ছাড়পত্র দিয়ে ইরা বসুর পেনশন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য সরকার। যে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মে ২০০৯ থেকে বকেয়া পেনশনও পাবেন খড়দার প্রিয়নাথ গালর্স হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা ইরা বসু। খবর সূত্রের, পেনশনের নমিনি করা আছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কন্যা সুচেতনাকে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর এবিপি আনন্দ খোঁজ পায় ইরা বসুর। পরনে অপরিচ্ছন্ন পোশাক, বাঁ হাতে মুষ্ঠিবদ্ধ ব্যাগ। ডানলপ মোড়ে সারাদিন তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন শীর্ণকায় চেহারার ইরা বসু। ফুটপাথে রাত কাটানো এই বৃদ্ধা যে ২০০৯ সাল পর্যন্ত খড়দার প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন ও সম্পর্কে তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা হন সেই খোঁজ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ইরাদেবীর পুরনো স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণকলি চন্দ জানিয়েছিলেন, কোনও কারণে তিনি নাকি পেনশনের কাগজপত্র জমা দিতে পারেননি। তাই পেনশন পাননি। উনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা, মীরাদেবীর বোন, সবাই জানে এখানে। রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হবে কেন, বুঝতে পারছি না। এও শোনা যায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর যখন করোনা হয়েছিল তিনি ফুটপাথে থেকেই পুজো দিয়েছিলেন জামাইবাবুর আরোগ্য কামনায়।
শেষমেশ প্রশাসনের তৎপরতায় তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। বুদ্ধেদেব জায়া মীরা ভট্টাচার্য বিবৃতি দিয়ে যার পরে জানান, স্বেচ্ছায় তাঁর জীবন বেছেছেন ইরা বসু। তারপর কিছুদিন চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। যার পরে বাড়ি ফিরে তিনি জানান, সল্টলেকে পৈতৃক বাড়ি। কিন্তু প্রাণে মারার হুমকি দেওয়ায় সেখানে থাকতে পারেন না। হাসপাতাল থেকে ফেরার পরে প্রাক্তন শিক্ষিকার অস্থায়ী ঠিকানা হয় পানিহাটি। পাশাপাশি এও তিনি জানান, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি, তাঁর পেনশনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ফুটপাথে দিন কাটাচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা!
দেখুন- 'পেনশন-সমস্যা মেটাতে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন অভিষেক', বাড়ি ফিরে জানালেন ইরা বসু