নয়া দিল্লি : সংকটজনক পরিস্থিতি দেশে। এই অবস্থায় চিন্তায় রয়েছেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্য়ালয়ে পড়াশোনা করা আফগানিস্তানের পড়ুয়ারা। কয়েক মাসের মধ্য়েই ভারতে তাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। কিন্তু, এই মুহূর্তে তাঁরা দেশে ফিরতে চাইছেন না। উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা ভেবে অ্যাকাডেমিক কোর্সের মাধ্যমে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে ইচ্ছুক তাঁরা।


চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এই ছাত্রদের অধিকাংশের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রের খবর, আফগানিস্তানের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা ভেবে তাঁরা সেখানে ফিরতে চাইছেন না। পিএইচডি-র মতো কোর্সের মাধ্যমে তাঁরা ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে চাইছেন।


সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জেএনইউ-তে পাঠরত এক আফগান ছাত্র বলেন, আফগানিস্তানের মতো একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে অধিকাংশ মানুষ বেকার। তাঁরা মৃত্যু অথবা বন্দিদশা থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। এই অবস্থায় মোটা ফি-র ব্যবস্থা করা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।


টার্মিনাল শিক্ষার্থীদের ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হস্টেল ছাড়তে হবে। এছাড়া অল্প আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের বাসস্থান সম্পর্কে অনিশ্চিত করে তুলছে। জালালউদ্দিন নামে এক ছাত্র বলেন, ওখানে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ আমাদের অবস্থা বুঝতে পারবেন এবং আমার ভিসার অনুমোদন বাড়িয়ে দেবেন। এছাড়াও, জেএনইউতে পিএইচডি বিদেশিদের জন্য খরচাবহুল। দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য যাদের কোনও উপায় থাকে না তাদের ক্ষেত্রেও। জানি না এখন কী করতে হবে।


রবিবার রাজধানী কাবুল দখল করেছে তালিবান। সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের দখল নিয়েছে তালিবান জঙ্গিরা। এদিকে রবিবার তালিবান কাবুলে প্রবেশ করতেই দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি। তবে তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লা মুহিব। তালিকায় নাম রয়েছে প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক অফিসের প্রধান ফজল মাহমুদ ফজলির। 


আফগান মিডিয়া জানিয়েছে, তালিবান আগ্রাসনের জেরে আগেই দেশ ছেড়েছেন একাধিক সাংসদ। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন আফগান সংসদের অধ্যক্ষ মীর রহমান রহমানি। তাঁর সঙ্গেই ইসলামাবাদের রাস্তায় হেঁটেছেন ইউনুস কানুনি, মুহাম্মদ মুহাকেক, করিম খলিলি, আহমদ ওয়ালি মাসুদ ছাড়াও সাংসদ আহমেদ জিয়া মাসুদ।


আফগান প্রেসিডেন্টের এই দেশত্যাগের ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে দেশে। আশরফ ঘনির দেশত্যাগ মেনে নিতে পারেননি ন্যাশনাল রিকন্সিলিয়েশন-এর উচ্চ পরিষদের প্রধান আবদুল্লা আবদুল্লা। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''বিপদের সময় দেশের মানুষকে ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। আফগানবাসী তাঁর বিচার করবে।''