নয়াদিল্লি: ক্ষমতার স্বাদ পেয়েই বদলে গেল তালিবানের সুর। নারী স্বাধীনতার ক্ষেত্রে চরম থেকে এবার 'নরমপন্থী' পথ ধরল তালিবান জঙ্গিরা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছে, একলা বাইরে যেতে পারবেন মহিলারা। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই হিজাব পরতে হবে তাদের।  


১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের কথা এখনও ভোলেনি আফগানিস্তান।তালিবান শাসনে কট্টরপন্থীদের ফরমানে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল দেশবাসীর প্রাণ। সবথেকে বেশি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল মহিলাদের। যদিও এবার কাবুল দখল করেই উল্টো কথা বলছে খোদ তালিবান মুখপাত্র। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জঙ্গি গোষ্ঠীর মুখপাত্র জানিয়েছে, মহিলাদের তারা সম্মান করে। সেই কারণে এবার থেকে শিক্ষা বা কাজের জন্য একা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন মহিলারা। তবে রাস্তায় বেরোনোর আগে অবশ্যই হিজাব পড়তে হবে তাদের। 


এই বলেই অবশ্য থেমে থাকেনি তালিবান মুখপাত্র। সে জানায়, এখন থেকে আদালতেই একমাত্র অপরাধীর বিচার হবে। যেকোনও কারও সমালোচনা করতে পারবে সংবাদমাধ্যম। তবে কোনও ব্যক্তির চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া করার অধিকার থাকবে না তাদের। স্বাভাবিকভাবেই তালিবান মুখপাত্রের এই বক্তব্যের সঙ্গে তাদের অতীতকে মেলাতে পারছে না আফগানিস্তানের মহিলারা।রিপোর্ট বলছে, অতীতে কান্দাহারের এক ব্যাঙ্কে কেবল মহিলা বলে কাজ হারাতে হয়েছিল ৯ জনকে। ওই ৯ মহিলার পরিবর্তে তাদের বাড়ির পুরুষদের কাজে যোগ দিতে বলেছিল তালিবান জঙ্গিরা।


রবিবার রাজধানী কাবুল দখল করেছে তালিবান। ক্ষমতার স্বাদ পেয়েই বিদেশিদের বিরুদ্ধে নতুন ফরমান জারি করেছে তারা।যেখানে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে থাকতে হলে তালিবান প্রশাসনের কাছে নাম রেজিস্টার করাতে হবে বিদেশিদের। অন্যথায় দেশে থাকতে পারবেন না তাঁরা। সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের দখল নিয়েছে তালিবান জঙ্গিরা। 


এদিকে রবিবার তালিবান কাবুলে প্রবেশ করতেই দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি।তবে তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লা মুহিব।তালিকায় নাম রয়েছে প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক অফিসের প্রধান ফজল মাহমুদ ফজলির। 


আফগান মিডিয়া জানিয়েছে, তালিবান আগ্রাসনের জেরে আগেই দেশ ছেড়েছেন একাধিক সাংসদ। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন আফগান সংসদের অধ্যক্ষ মীর রহমান রহমানি। তাঁর সঙ্গেই ইসলামাবাদের রাস্তায় হেঁটেছেন ইউনুস কানুনি, মুহাম্মদ মুহাকেক, করিম খলিলি, আহমদ ওয়ালি মাসুদ ছাড়াও সাংসদ আহমেদ জিয়া মাসুদ।


আফগান প্রেসিডেন্টের এই দেশ ত্যাগের ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে দেশে। আশরফ ঘনির দেশত্যাগ মেনে নিতে পারেননি ন্যাশনাল রিকন্সিলিয়েশন-এর উচ্চ পরিষদের প্রধান আবদুল্লা আবদুল্লা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''বিপদের সময় দেশের মানুষ ছেড়ে চলে গেলেন তিনি।আফগান বাসী তাঁর বিচার করবে।'' একটি ভিডিয়ো বার্তায় এই কথা বলেছেন তিনি।