নয়াদিল্লি: আফগানিস্তানে মহিলাদের উপর নিত্যনতুন ফতোয়া জারির খবর উঠে আসে প্রায়শই। আফগান মন্ত্রীর ভারত সফরে মহিলা সাংবাদিকদের ‘ব্রাত্য’ রাখা নিয়েও তাই প্রশ্ন উঠছিল। বিতর্ক শুরু হওয়ায় সেই নিয়ে এবার সাফাই দিলেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তাঁর দাবি, ‘প্রযুক্তিগত কারণে’ মহিলাদের আগের সাংবাদিক বৈঠকে রাখা যায়নি। (Afghanistan News)
মুত্তাকির সাংবাদিক বৈঠকে মহিলাদের ব্রাত্য রাখা নিয়ে বিতর্কে চরমে উঠেছিল। এমনকি, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এই দাবি মানল কী করে, কেন মহিলা সাংবাদিকদের এভাবে অসম্মান করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন বিরোধীরাও। সেই আবহে রবিবার দিল্লিতে মহিলা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুত্তাকি। আগের সাংবাদিকদের কেন আগে ডাকা হয়নি, তা নিয়ে সাফাই দিলেন তিনি। (Amir Khan Muttaqi)
মহিলা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন মুত্তাকি বলেন, “ওই সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে বলতে চাই, অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। হাতেগোনা কিছু সাংবাদিককেই ডাকা হয়। প্রযুক্তিগত সমস্যাই বলা যায়, আর কোনও সমস্যা ছিল না। আমাদের সহকর্মীরা নির্দিষ্ট কিছু সাংবাদিককেই ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।”
আফগানিস্তানে মহিলাদের উপর বিধিনিষেধ চাপানো থেকে, মহিলাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, কম অভিযোগ নেই তালিবান সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু মুত্তাকির বক্তব্য, “আমাদের স্কুল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ১০ মিলিয়ন পড়ুয়া রয়েছেন, যাঁর মধ্যে ২৮ লক্ষের বেশি পড়ুয়া মহিলা ও মেয়ে। মাদ্রাসায় স্নাতকস্তর পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে বইকি। কিন্তু নারীশিক্ষাকে ‘হারাম’ বলে দাগিয়ে দিইনি আমরা। পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয় শুধু।”
এক সপ্তাহব্যাপী সফরে ভারতে এসেছেন মুত্তাকি। ১০ অক্টোবর দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকও করে তিনি। কিন্তু সেখানে মহিলা সাংবাদিকদের অনুপস্থিতি নজর কাড়ে সকলের। সাংবাদিক থেকে বিরোধী শিবিরের রাজনীতিক, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মীরা ওকযোগে সরব হন। এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান উইমেন্স প্রেস কর্পস জানায়, মহিলাদের ব্রাত্য রাখার সিদ্ধান্ত ‘অত্যন্ত বৈষম্যমূলক’। এর সপক্ষে কোনও সাফাই হয় না। এর পরই রবিবার মহিলা সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানান আফগান মন্ত্রী।