জামনগর(গুজরাত) : একদিকে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন আফগানরা। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে আঁকড়ে ধরছেন বিমান। ঠাসাঠাসি, ধস্তাধস্তি করেই কোনওক্রমে তালিবানের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা। এরকমই একটা পরিস্থিতিতে নিজেদের কর্তব্যে অনড় থেকেছেন তাঁরা। এবার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সেই আফগানিস্তান থেকে ফিরলেন ১২০ জন ভারতীয়। কাবুলে ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং ভারতীয় কর্মীদের ফেরোনা হল। মঙ্গলবার গুজরাতের জামনগরে অবতরণ করে সেই বিমান। দেশে ফেরার পরই তাঁদের মধ্যে আনন্দের ঝলক দেখা যায় চোখে-মুখে। তাঁরা স্লোগান তোলেন, "ভারত মাতা কি জয়", "বন্দে মাতরম"।

  


প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘনির দেশত্যাগ এবং তালিবানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশের পর রবিবার আফগানিস্তান সরকার ভেঙে পড়ে। তালিবানরা কাবুলে ঢুকে রাষ্ট্রপতি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালিবান নেতারা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ লাভ এবং আফগানিস্তানের রাজধানীতে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল করার পর দোহায় ভবিষ্যৎ সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে।


এদিকে তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকেই সেদেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গেছে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। তালিবান আতঙ্কে নিজের মাটি ছেড়ে দূরে পালিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টার ছবি দেখা গেছে গতকালই। গতকাল উড়ন্ত বিমান থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের। এর পরও দেখা গেছে মর্মান্তিক ছবি। কাবুল বিমানবন্দরের দিকে দৌড়াতে দেখা গেছে মহিলা, পুরুষ ও শিশুদের। এমনকী আমেরিকার বায়ুসেনার বিমানে ঝুলে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টাও করেন কেউ কেউ। তাতেই বিমান থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা। যা এ পর্যন্ত আফগানিস্তান সংকটের অন্যতম ভয়াবহ চিত্র হয়ে উঠে এসেছে। শুধু কী তাঁরাই ! যাঁরা কোনও ক্রমে বিমানে উঠতে পেরেছেন, তাঁরা ঠাসাঠাসি করেই বিমান চেপেছেন। 


এই পরিস্থিতির মধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান AI244 ১২৯ জন যাত্রীকে কাবুল থেকে দিল্লি নিয়ে আসে। তাঁরা দেশে ফিরে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের পরিস্থিতি সত্যিই খারাপ। এর পর আজ ১২০ জন ভারতীয় আধিকারিককে নিয়ে ফেরে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ বিমান। গুজরাতের জামনগরে বিমানটি অবতরণ করে। এর আগে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং ভারতীয় কর্মীদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সেদেশের পরিস্থিতি দেখে এই সিদ্ধান্ত।