ইসলামাবাদ: তালিবান আফগানিস্তান দখল করতেই বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিক হয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করছে আফগানিস্তানের বাসিন্দারা। অসুস্থ রোগী ছাড়াও দেশ বদলের দলে রয়েছে আফগান-তালিবান বন্দিরা। রিপোর্ট বলছে, গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের চমন সীমানা দিয়ে হাজারেরও বেশি আফগানি দেশে প্রবেশ করেছে।


মঙ্গলবার থেকেই বর্ডার খুলে দেয় পাকিস্তান। প্রামাণ্য আফগান নাগরিকের নথি থাকলে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়েছে আফগান শরনার্থীদের। অল জজিরা নিউজ চ্যানেলকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন বেশকিছু পর্যটক ও আফগানিস্তান অথরিটি। শরনার্থীদের বেশিরভাগের দাবি, আফগানিস্তানে স্বাস্থ্য পরিষেবা একেবারে ভেঙে পড়েছে। সেই কারণে প্রবীণ নাগরিক তথা অসুস্থদের নিয়ে পাকিস্তানে আসতে হচ্ছে আফগান নাগরিকদের।


আফগানিস্তানের অতীতের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০০১ সাল থেকে মার্কিন সেনা ও আফগান সরকারের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে তালিবানের। যার খেসারত দিতে হয়েছে আফগানিস্তানবাসীকে। মার্কিন যুক্তরাষ্টের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষণার তথ্য বলছে, বিগত ২০ বছরে কমপক্ষে ৪৭,০০০ আফগানিস্তানের বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের অধীনে এই গবেষণা করেছিল ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। 


আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কান্দাহারের বাসিন্দা আবদুল্লা বলেন, ''এখন দেশে কোনও ধরনের হিংসার পরিস্থিতি নেই। কারণ দেশের সব জায়গায় তালিবান শাসন জারি হয়েছে।'' মঙ্গলবার অন্যদের সঙ্গে আফগানিস্তান ছেড়ে পাকিস্তানে গিয়েছেন আবদুল্লা। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট বলছে,  তালিবানের আফগানিস্তান দখলের পর ক্রমশ ভিড় বেড়েই চলেছে পাকিস্তানের চমন সীমান্তে। 


অলজজিরা নিউজকে অনেকে জানিয়েছেন,আফগানিস্তানের জেলে বন্দিদের মুক্তি দিয়েছে তালিবান। তাদের নিতেই বর্ডারে এসেছে একাধিক পরিবার। সাদা আফগান তালিবান পতাকায় ছেয়ে গিয়েছে এলাকা। মুক্তি পাওয়া তালিবান বন্দিদের তালিকায় নাম ছিল সানাউল্লার। মঙ্গলবার সুযোগ পেয়ে পাকিস্তানে ঢুকেছে সে।


সানাউল্লার দাবি, পাকিস্তানের কোয়েটাতে বাড়ি ছিল তার। ২০১৩ সালে আফগানিস্তানের সেনা তাকে গ্রেফতার করে।পরবর্তীকালে আফগানিস্তানের অখ্যাত জেল বাগ্রামে রাখা হয় তাকে। সেই বছরই আফগানিস্তান সরকারের ওপর দেশের ভার সপে দেয় আমেরিকা। চলতি বছর মার্কিন সেনা দেশ ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করতেই জেল দখল করে নেয় তালিবান জঙ্গিরা। মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই ৭০০০ বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়।