লন্ডন: ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতের চলতি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে গুলিয়ে ফেলে অস্বস্তিতে বরিস জনসন। হাউস অব কমন্সে বুধবার সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারতে কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বিক্ষোভে সামিল কৃষকদের মোকাবিলায় জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, পুলিশি বলপ্রয়োগের উল্লেখ করেন বিরোধী লেবার পার্টির এমপি তনমনজিত্ সিংহ ধেসি। ভারতের কৃষকদের আন্দোলনের সমর্থনে সরব ধেসি প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী জনসন কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের আন্তরিক উদ্বেগ, চলতি অচলাবস্থা, দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে অবরোধ চলতি উঠে যাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানাবেন। তিনি প্রশ্ন করেন, প্রত্যেকের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মৌলিক অধিকার আছে বলে জনসন কি বিশ্বাস করেন। কিন্তু সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় জনসন পরিবর্তে কাশ্মীর বিতর্কের ইস্যু তুলে বলতে থাকেন, আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলতি ঘটনাবলীতে গভীর উদ্বিগ্ন অবশ্যই, কিন্তু এসব প্রাথমিকভাবে দুটো সরকারের নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়ার বিষয় এবং আমি জানি এটা উনিও মানবেন। হতচকিত ধেসি সঙ্গে সঙ্গে সোস্য়াল মিডিয়ায় জনসনকে সম্পূর্ণ বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কহীন বলেন, তাঁকে সমর্থন করে বিস্ময় প্রকাশ করেন লেবার পার্টির অন্য এমপিরা, আরও অনেকে।
তড়িঘড়ি সরকারি মুখপাত্র সাফাই দিতে আসরে নেমে জানান, প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে প্রশ্নটা ঠিকঠাক শুনতেই পাননি। বিদেশ দপ্তর ভারতের কৃষক আন্দোলনের ওপর নজর রাখছে বলেও জানান মুখপাত্রটি।
ব্রিটিশ শিখ লেবার এমপি প্রীত কৌর গিল বলেন, এই সরকারের অযোগ্যতা ফের প্রকট। বিদেশসচিব ডমিনিক রাব গোটা দুনিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিবাদগুলির একটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফই করেননি! আরেক লেবার সাংসদ তথা প্রাক্তন শ্যাডো বিদেশসচিব এমিলি থর্নবেরি বলেন, মনে হয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী পঞ্জাব আর কাশ্মীরের পার্থক্যই জানেন না! আমাদের তো হতবাক হওয়ারই কথা। যদিও বিদেশ, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস ভারতের কৃষক আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিকদের দাবির ব্য়াপারে নাক গলাতে চায়নি। তাদের বক্তব্য, পুলিশ নামিয়ে কৃষক প্রতিবাদ মোকাবিলা করাটা ভারত সরকারের ব্য়াপার।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষি বিলের প্রতিবাদে কয়েক হাজার কৃষক হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে দিল্লির সীমান্ত অবরোধ করে বসে আছেন। নতুন আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য(এমএসপি) ব্যবস্থা উঠে যাবে, বড় কর্পোরেটদের দয়ায় থাকতে হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। যদিও আশঙ্কা উড়িয়ে সরকারের দাবি, নতুন আইনে কৃষকদের সামনে আরও ভাল সুযোগ, সম্ভাবনা তৈরি হবে, নতুন নতুন প্রযুক্তি আসবে।