তিরুঅনন্তপুরম: করোনার আশঙ্কায় কী না করছেন এক শ্রেণির মানুষ!

ভয়ের চোটে একজন কী এক গাছগাছড়ার রস খেয়েছিলেন, ফলে লিভারের বারোটা বেজেছে। চিকিৎসকদের মাথায় হাত। নব্বই শতাংশের ওপর শিক্ষিত মানুষের বাসস্থান কেরলে ঘটেছে এই ঘটনা।

বিষয়টি টুইটারে জানিয়েছেন বরুণ চেরুপারামবাথ নামে জনৈক কার্ডিওলজিস্ট। এর্নাকুলামের মেডিক্যাল ট্রাস্ট হাসপাতালে কর্মরত এই চিকিৎসক বলেছেন, করোনা রুখতে ভেষজ কিছু পানীয় খাওয়া ওই ব্যক্তির লিভারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পড়েছে। অথচ আগে তাঁর লিভারের কোনও সমস্যাই ছিল না। ওই পানীয় খাওয়ার পর এখন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি।


চিকিৎসকরা বারবার জানাচ্ছেন, অনুমোদন না পাওয়া কোনও ওষুধই করোনা ঠেকাতে পারে মনে করে ইচ্ছেমত খেয়ে ফেলবেন না। এখন মুড়িমুড়কির মত ছড়াচ্ছে এমন মিথ্যে বিজ্ঞাপন। ভেষজ ওষুধ বলে দাবি করলেই তা নিরাপদ হয়ে যায় না, তা থেকেও বিপদ হতে পারে।


কেরলেরই কিছু চিকিৎসক গবেষণা করে দেখেছেন, এ ধরনের অল্টারনেটিভ মেডিসিন মূলত প্রচলিত চিন ও ভারতে, এর ফলে লিভার ড্যামেজের আশঙ্কা। লিভার ফেলিওরও হতে পারে। যাঁরা এ ধরনের ওষুধ খান তাঁরা মূলত দরিদ্র, লিভার সংক্রান্ত অসুখের জেরে এঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি। শুধু লিভারই নয়, এ ধরনের পানীয় কিডনির ওপরেও মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়তে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিডনির সমস্যায় প্রচলিত ওষুধ খেয়ে অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর সেই চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়ে অনেকে ঝুঁকছেন অপ্রচলিত ভেষজ পানীয়ের প্রতি, তা কিডনির অবস্থা আরও জটিল করে তুলছে। আর এবার করোনা অতিমারী শুরু হওয়ার পর ভয়ের চোটে অনেকেই নানা মিশ্রণ খেয়ে ফেলছেন যা করোনা সারাতে পারে বা রুখতে পারে এমন কোনও প্রমাণ নেই, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদিতও নয়।  এ বছর জানুয়ারিতে যেমন থানিকাসালাম বেণী নামে চেন্নাইয়ের এক বাসিন্দা দাবি করেন, তিনি করোনার প্রতিষেধক এক ভেষজ ওষুধ তৈরি করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের প্রচার করায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, করোনার এখনও কোনও ওষুধ বার হয়নি। বারবার হাত পরিষ্কার করুন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, বাইরে যেতে হলে মাস্ক পরুন। লকডাউনের কড়াকড়ি এখন ধীরে ধীরে তুলে নেওয়া হচ্ছে ঠিকই কিন্তু করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কমেনি একটুও।