নয়াদিল্লি: ধ্বংসস্তূপে দেহাংশ খুঁজে পেতে যখন হিমশিম অবস্থা, সেই সময়ই দৌড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। আমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে বেঁচে ফেরা একমাত্র যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশকে নিয়ে তাই জোর চর্চা। কেউ বলছেন বরাত জোরে বেঁচে ফিরেছেন তিনি। কেউ আবার বলছেন, বিমানের সবচেয়ে নিরাপদ আসনে বসেছিলেন বলেই রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু বিমানে সত্যিই কি নিরাপদ আসন বলে কিছু হয়? (Ahmedabad Plane Crash)
এয়ার ইন্ডিয়ার যে বিমানটি আমদাবাদে ভেঙে পড়ে, তাতে আসন নম্বর 11A-তে বসেছিলেন রমেশ। তিনি জানিয়েছেন, বিমান ভেঙে পড়ার পরাও সিটবেল্ট পরা অবস্থাতেই ছিলেন তিনি। কোনও রকমে তা খুলে লাফিয়ে বেরিয়ে আসেন। তাঁর বেঁচে ফেরাকে যদিও ‘মিরাকল’ বলছেন অনেকে, অনেকে আবার আসনটির অবস্থানকেই সৌভাগ্য়ের কৃতিত্ব দিচ্ছেন। ( Vishwash Kumar Ramesh)
কিন্তু সত্যিই কি বিমানে নিরাপদ আসন বলে কিছু থাকে? বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানের একেবারে শেষের, ডানদিকের সামনের অংশের কিছু আসন তুলনামূলক নিরাপদ। বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ীই এমন তত্ত্ব উঠে এসেছে। অথচ আমদাবাদে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের মাঝামাঝি অংশে, ডানার ঠিক আগে ছিল 11A আসনটি। তাই রমেশের বেঁচে ফেরাকে ‘মিরাকল’ বলারই পক্ষপাতী বিশেষজ্ঞরা।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ইকনমিক ক্লাসের প্রথম সারিতেই ছিল 11A আসনটি। বিজনেস কেবিনের ঠিক পিছনে, বাঁ দিকের এমার্জেন্সি একজিটের কাছাকাছি জায়গায়। বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়লে 11A আসনটি সমেত সামনের বাঁদিকের অংশ ভেঙে পড়ে। রমেশ জানিয়েছেন, তিনি হস্টেলে গিয়ে পড়েননি। বরং মাটির কাছাকাছি জায়গায়,গ্রাউন্ড ফ্লোরে গিয়ে পড়েন। কিছুটা জায়গা ছিল সেখানে। ফলে বেরিয়ে আসতে পারেন। এমার্জেন্সি একজিটের কাছাকাছি বসে থাকাতেই রমেশ রক্ষা পেয়েছেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
তবে বিমানে নিরাপদ আসন বলে কিছু হয় না, এক এক বিমানে আসনের বিন্যাস হয় এক এক রকম, তাই দুর্ঘটনার তীব্রতার উপরই সবকিছু নির্ভর করে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তথ্য় অনুযায়ী, বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে ২০০৭ সালে Popular Mechanics Study-তে দেখা যায়, বিমানের পিছনের দিকের আসনে বসলে তাও কিছুটা সুরক্ষিত থাকা যায়। আবার ডানা বরাবর আসনগুলি তুলনামূলক স্থিতিশীল হয় বলেও উঠে আসে।
আমদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। বিমানবন্দরের গণ্ডি ছাড়িয়ে সটান পড়ুয়া চিকিৎসকদের হস্টেলের দেওয়ালে ধাক্কা মারে। সজোরে আছড়ে পড়ে। বিমানে যাত্রী ও বিমানকর্মী মিলিয়ে মোট ২৪২ জন সওয়ার ছিলেন। তাঁদের মধ্য়ে একা রমেশই বেঁচে ফিরেছেন। হস্টেলের পড়ুয়া চিকিৎকদের অনেকে মারা গিয়েছেন। মারা গিয়েছেন সাধারণ মানুষও। মৃতের সংখ্য়া প্রায় ৩০০ ছুঁই ছুঁই।