আমদাবাদ : "সারা রাত আমার সঙ্গে শুয়েছিল নাতিরা। ওদের স্কুলব্যাগ কিনে দিয়েছিলাম। সেই স্কুলব্যাগ নিয়েই ওরা ঘুমিয়ে পড়েছিল। বলছিল, এবার ওরা লন্ডনে পড়াশোনা করবে।" এই কথাগুলি বলতে বলতে চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলেন না জেপি যোশী। ছেলে-বউমা ও তিন নাতি-নাতনিকে হারিয়ে কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় যে ২৪১ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক তথা রেডিওলজিস্ট প্রতীক যোশী, তাঁর স্ত্রী ও প্যাথোলজিস্ট চিকিৎসক কোমি যোশী এবং তাঁদের তিনি সন্তান - ৯ বছরের মেয়ে ও ৪ বছরের দুই যমজ সন্তান। লন্ডনে ডাক্তারি করতেন প্রতীক। অন্যদিকে, রাজস্থানে কাজ করছিলেন তাঁর স্ত্রী। দুর্ঘটনার আগে বিমানের ভিতর থেকে তোলা তাঁদের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে ভাইরাল।   

প্রতীকের বাবা জেপি যোশী বলেন, "পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যেতে ভারতে এসেছিল ছেলে। চার বছর ধরে লন্ডনে কাজ করছিল। স্ত্রী-সন্তানদের দেখতে ও প্রায়ই আসত। কখনো সরাসরি উড়ান নিত না। কিন্তু, এবার নিয়েছিল, কারণ সেটা বাচ্চাদের পক্ষে সহজ হত। ওর স্ত্রী উদয়পুরের কাজ থেকে ইস্তফা দিয়েছিল যাতে ওরা সবাই একসঙ্গে লন্ডনে গিয়ে থাকতে পারে। বউমা সবকিছু গোছগাছ করেছিল এবং বাচ্চাদের বদলি সংশাপত্রও জোগাড় করেছিল নিজেই। আমরা যমজ দুই নাতি আগামী ১৫ অগাস্ট ৫ বছরে পা দিত। ওরা ১৫ অগাস্ট জন্মেছিল, এখন দু'জনেই মুক্ত।"

 

তিনি আরও বলেন, "আমরা ওদের বিমানবন্দরে ছাড়তে গিয়েছিলাম। ছেলে বলেছিল, তোমরাও আমাদের সঙ্গে লন্ডনে চলে যাওয়ার জন্য তৈরি হও। আমি ওকে বলেছিলাম, প্রথমে তোমরা সেটেল করো। তারপরে আমি আসব। আমিও ক্লিনিক বন্ধ করার কথা ভাবছিলাম। যাতে আমি ও আমার স্ত্রী লন্ডনে সন্তানের কাছে গিয়ে থাকতে পারি। সোশাল মিডিয়ায় যে ছবিটা ভাইরাল হয়েছে সেটা বিমানের ভিতর থেকে নেওয়া। লন্ডনে যাচ্ছিল বলে আমার নাতি-নাতনিরা খুব খুশি ছিল। নাতিরা সারা রাত আমার সঙ্গে শুয়েছিল। আমরা ওদের স্কুলব্যাগ কিনেছিলাম। সেই স্কুলব্যাগ নিয়েই ওরা সারা রাত ঘুমিয়েছিল। বলছিল, এবার ওরা লন্ডনে পড়াশোনা করবে। এয়ারলাইন্স থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।"