নয়াদিল্লি: দেখতে দেখতে একমাস পার হয়ে গিয়েছে। আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও চিহ্নিত হয়নি। আর সেই আবহেই দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমে একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে। বিমানের জ্বালানির সুইচ বন্ধ করে দেওয়া থেকে পাইলটের মানসিক স্বাস্থ্য, নতুন তথ্য উঠে আসছে রোজই। সেই নিয়ে এবার সতর্ক করল ভারত সরকারের বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা (Aircraft Accident Investigation Bureau/AAIB). যাচাই না করে ভুয়ো খবর ছড়ানো নিয়ে সতর্ক করা হল। (Ahmedabad Plane Crash)
বৃহস্পতিবার লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে আমদাবাদ দুর্ঘটনা নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করে AAIB. বলা হয়, ‘কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তথ্য যাচাই না করেই বারংবার সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে, বেছে বেছে কিছু তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। তদন্ত চলাকালীন এই ধরনের আচরণ দায়িত্বজ্ঞানহীন। সাধারণ মানুষ এবং সংবাদমাধ্যমকে বলব, আগেভাগে কোনও তত্ত্ব ছড়াবেন না, যাতে তদন্তপ্রক্রিয়ার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত নয়। AAIB-র তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। চূড়ান্ত রিপোর্ট সামনে এলেই দুর্ঘটনার মূল কারণ বোঝা যাবে’। (Air India Plane Crash)
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস কেন্দ্রের বেসমারিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রককে চিঠি দেয়। তারা জানায়,আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়া নিয়ে AAIB-র প্রাথমিক রিপোর্টে পূর্ব নথিভুক্ত দু’টি সম্ভাব্য কারণ বিবেচনা করে দেখা হয়নি। প্রযুক্তিগত ত্রুটির দিকটি বিবেচনা করে না দেখে, উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই পাইলটদের ভুলের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে রিপোর্টে। তাই তদন্তকারী টিমে বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে আবেদন জানানো হয় পাইলটদের সংগঠনের তরফে। এর পাশাপাশি, Air Line Pilots Association (ALPA) জানায়, দুই পাইলট যাত্রীদের বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করেন। তাঁদের সম্মান জাানোর পরিবর্তে চরিত্র হনন করা হচ্ছে।
আর তার পরই AAIB-র তরফে বিবৃতি দিয়ে ভুয়ো তথ্য নিয়ে সতর্ক করা হয়। আমদাবাদে ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে বিদেশি নাগরিকরাও সওয়ার ছিলেন। ফলে বিদেশি দুর্ঘটনার কারণ জানতে মুখিয়ে তৎপর বিদেশের সংবাদমাধ্যমও। সম্প্রতি Wall Street Journal-এর একটি রিপোর্টে ককপিটে দুই পাইলটের কথোপকথন নিয়ে বিশদ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এক পাইলটের দরুণ ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছনো বন্ধ হয়ে যায় বলে ইঙ্গিত মেলে তাতে। শুধু তাই নয়, ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়ালের মেডিক্যাল রিপোর্টও তুলে ধরে বিদেশের কিছু সংবাদমাধ্যম, যাতে দেখা যায়, মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। নিজে বিয়ে করেননি। মা মারা যান ২০২২ সালে। বৃদ্ধ বাবার দেখভালও তাঁকে করতে হতো। বাবার দেখভালের জন্য অবসরগ্রহণের কথাও ভাবছিলেন তিনি। যদিও বিমান পরিবহণ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মোহন রঙ্গনাথন এই যুক্তি মানেননি। তাঁর বক্তব্য ছিল, “বহু পাইলটই অবসাদের কথা জানান, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যার কথা জানান। উনি তো (সুমিত) তিন-চার বছর বিমান ওড়ানওনি। মেডিক্যাল লিভ নিয়েছিলে এর জন্য়।”